আমদানিতে অফশোর ব্যাংকিং থেকে অর্থায়নের মেয়াদ বাড়ল

মূলধনী যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল ও সরকারি পর্যায়ে আমদানিতে অফশোর ব্যাংকিং থেকে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং কার্যক্রমে অর্থায়নের মেয়াদ আরো ছয় মাস বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক।

যার মেয়াদ শেষ হয়েছিল গত ডিসেম্বরে। ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা অনুযায়ী, অফশোর ব্যাংকিং থেকে দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিং কার্যক্রমে মূলধন স্থানান্তর (প্লেসমেন্ট) করতে পারে না ।

বৈদেশিক মুদ্রার সংকট মেটাতে গত জুলাই মাসে অফশোর ব্যাংকিং নীতিমালা নীতিমালার ৭.৩ অনুচ্ছেদ ৬ মাসের জন্য শিথীল করে ফান্ড প্লেসমেন্ট করার সুযোগ দেওয়া হয়।

এ সুযোগ দেওয়ায়, ব্যাংকগুলোর অফশোর ব্যাংকিংয়ে থাকা বৈদেশিক মুদ্রা ব্যবহার করে ব্যাংকের সব ধরনের শাখাগুলো পণ্য আমদানীর দায় পরিশোধের সুযোগ পায়।

গত বছরের জুলাই মাসে দেওয়া এ সুযোগটির মেয়াদ শেষ হয় গত ডিসেম্বরে। গত বছরের জুলাই মাসে প্রথমবারের মতো এ সুযোগটি দেওয়ার সময়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছিল, এর মেয়াদ কোনো অবস্থাতেই ছয় মাসের বেশি হবে না।

ইউক্রেইন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবসহ নানা কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ চাপে পড়ে। আমদানি নিয়ন্ত্রণ করাসহ একাধিক পদক্ষেপ নিয়ে আসছে বাংলাদেশ।

গত বছরের জুলাইয়ে ৮ বিলিয়নের উপরে থাকা নতুন ঋণপত্র (এলসি) খোলার পরিমাণ গত ডিসেম্বর শেষে ৩ বিলিয়নে নেমেছে। বৈদেশিক মুদ্রার খরচ নতুন পণ্য আমদানির বেলায় কমে এলসি নিস্পত্তির পরিমাণ গত ডিসেম্বর শেষে দাঁড়িয়েছে ৫ বিলিয়নের ঘড়ে। গত বছরের জুলাই মাসেও যা ছিল সাড়ে ৭ বিলিয়ন ডলারের ঘরে।

আমদানি পর্য়ায়ে বৈদেশিক মুদ্রার খরচে নতুন এলসির বেলায় কমিয়ে আনা সম্ভব হলেও পূর্বের এলসি ও দায় পরিশোধে তেমন অগ্রতি হচ্ছে না।

এতে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত ২৯ ডিসেম্বর শেষে ৩৩ দশমিক ৮৩ বিলিয়ন ডলার দাঁড়িয়েছে। চলতি সপ্তাহে আমদানির জন্য আকু বিল পরিশোধ করতে হবে বাংলাদেশকে, যা ১ বিলিয়ন ডলারের উপরে। এ পরিমাণ অর্থ পরিশোধের পর রিজার্ভ আরো চাপে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

তাই বৈদেশিক মুদ্রার রিজারভে চাপ কমাতে অফশোর ব্যাংকিং থেকে অর্থায়ন সুবিধার মেয়াদ আরো ৬ মাসের জন্য বাড়ানো হলো।

আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী, কোনো দেশের আমদানি দায় মেটাতে তিন মাসের সম পরিমাণ বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ থাকতে হয়।

গত জুলাই-নভেম্বর সময়ে ৩ হাজার ২৫৩ কোটি ৯০ লাখ ডলারের পণ্য ও সেবা আমদানি করেছে বাংলাদেশ। এ হিসাবে গড়ে প্রতি মাসে ৬ দশমিক ৫০ বিলিয়ন ডলারের আমদানি হয়েছে।

এ হিসাব ধরলেও বাংলাদেশের হাতে থাকা রিজার্ভ দিয়ে অন্তত ৫ মাসের আমদানি বিল মেটাতে পারার কথা। কিন্তু আইএমএফ এর হিসাবে রিজার্ভ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বাদ দিলে তা চার মসের কম সময়ের জন্য হবে।

বুধবার এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সার্কুলার দিয়ে জানিয়েছে, মূলধনী যন্ত্রপাতি, শিল্পের কাঁচামাল ও সরকারি পর্যায়ে আমদানি ব্যয় নিস্পত্তিতে অফশোর ব্যাংকিং থেকে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিয়ে মূলধন নেওয়ার সুযোগের মেয়াদ বাড়িয়ে ৩০ জুন, ২০২৩ করা হলো।

গত বছরের জুলাইয়ের সার্কুলার অনুযায়ী, ‘‘ব্যাংকের রেগুলেটরি মূলধনের সর্বোচ্চ ২৫ শতাংশ ফান্ড প্লেসমেন্ট করা যাবে অভ্যন্তরীণ ব্যাংকিংয়ে অফশোর ব্যাংকিং থেকে।’’