ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়

আনোয়ার হোসেন

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ থানার শতাধিক স্থান থেকে ফসলি জমির মাটি যাচ্ছে ইটভাটায়। এতে শত শত একর জমির ফসল নষ্ট হচ্ছে। একই সঙ্গে উর্বরতা হারিয়ে অনাবাদি হয়ে পড়ছে আবাদি জমি। কমতে শুরু করেছে ফসলের উৎপাদন। স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতায় ইটভাটার মালিকরা ভেকু মেশিন দিয়ে এসব ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছে বলে অভিযোগ আছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, চন্দ্রগঞ্জ থানা এবং হাইওয়ে থানার উত্তর পার্শ্বেই দেওপাড়া গ্রামের ঘোষ বাড়ির সামনে মালিকানার পাশাপাশি রয়েছে ভিপি সম্পত্তি। ভিপি সম্পত্তি থেকে মাটি বিক্রি করছে লক্ষ্মীপুর জেলা জাতীয় পার্টির সহ-সভাপতি সামছুউদ্দিন পাটোয়ারি। এখান থেকে মান্দারীর ‘বাবর’ নামক ইটভাটায় মাটি সরবরাহ করছে স্থানীয় আওয়ামীলীগ নেতা শাহজাহান। ভেকু মেশিনের মাধ্যমে নাম্বার বিহীন মাটি সরবরাহকারী ট্রাক দিয়ে ফসলি জমির মাটি চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার সামনে দিয়েই মান্দারীর বাবরের ইটভাটায় নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

সূত্রে জানা যায়, এসব নাম্বার বিহীন মাটি সরবরাহকারী হাইড্রোলিক ট্রাক চলাচল নির্বিঘ্ন করতে চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের নামে প্রতি গাড়ি থেকে মাসিক হারে এক হাজার টাকা করে মান্থলি আদায় করছে, মান্দারীর বাবর ব্রিকসের নিয়োগকৃত বাবুল নামক জনৈক ব্যক্তি ৷

মঙ্গলবার (২৪ ডিসেম্বর) দেওপাড়া গ্রামের ঘোষ বাড়ির সামনে গিয়ে দেখা যায়, মাটি ব্যবসায়ী শাহজাহান সেখানে ভেকু মেশিন দিয়ে ফসলি জমির মাটি প্রায় ১০ থেকে ১৫ ফুট গভীর করে মাটি কেটে নিচ্ছেন। এতে পাশের জমির মালিক ও কৃষকের ফসলি জমি ভাঙনের মুখে পড়েছে। তারা স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের জরুরি হস্থক্ষেপ কামনা করছেন।

এ ব্যাপারে মাটি শাহজাহান ফসলি জমির মাটি কেটে নেওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, আমার মতো চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকায় শত শত ব্যবসায়ী ফসলি জমির মাটি কেটে নিচ্ছেন, আগে তাদের বন্ধ করতে বলেন তারপরই আমি বন্ধ করব। গভীর করে মাটি কেটে নেওয়ায় পাশের জমির ক্ষতির কথাও স্বীকার করেন তিনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ইটভাটা মালিক জানান, ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি ইটভাটায় বিক্রি করা মানে ওই কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হওয়া। তিনি বলেন, চন্দ্রগঞ্জ থানা এলাকায় এখন চলমান ইটভাটায় ইট তৈরি করার জন্য চন্দ্রগঞ্জ থানার বিভিন্ন এলাকার ফসলি জমির মাটিই সংগ্রহ করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় প্রশাসনকে তারা ম্যানেজ করেই ফসলি জমির উপরিভাগের মাটি কেটে নিচ্ছেন বলে তিনি জানান।

চন্দ্রগঞ্জ হাইওয়ে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. রুহুল আমিন প্রদীপ্ত’কে জানান, নাম্বার বিহীন হাইড্রোলিক ট্রাকে মাটি সরবরাহের বিষয়টি আমার জানা নেই। এ বিষয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার আদেশ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করব।