পরিবহন শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে গেলো কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে বড় শ্রমিক ধর্মঘট দেখলো জার্মানি। সোমবার ইউরোপের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ জার্মানিজুড়ে স্থবির ছিল বিমানবন্দর, বাস এবং ট্রেন স্টেশনগুলো।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, ভেরদি ট্রেড ইউনিয়ন এবং রেলওয়ে ও পরিবহন ইউনিয়ন ইভিজির ডাকা ২৪ ঘণ্টার ধর্মঘটের কারণে এ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়।
ধর্মঘটের কারণে দেশটির দুই বৃহত্তম বিমানবন্দর মিউনিখ ও ফ্রাঙ্কফুর্টের টার্মিনালগুলো প্রায় জনশূন্য ছিল। বাতিল হয় অধিকাংশ ফ্লাইট।
দেশটির এয়ারপোর্ট অ্যাসোসিয়েশন জানায়, ধর্মঘটের কারণে প্রায় চার লাখ বিমানযাত্রী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধুমাত্র ফ্রাঙ্কফুর্টেই এক হাজার দুইশ’ ফ্লাইট বাতিল হয়েছে।
অন্যদিকে জার্মানির ট্রেন পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ডয়েচ বান দূরবর্তী ট্রেন পরিষেবাগুলো বাতিল করে। ট্রেনের অভাবে চাপ বারে ট্যাক্সি সেবার ওপর।
এদিন হলুদ বা লাল হাই-ভিজিবিলিটি জ্যাকেট পরা ধর্মঘটকারী শ্রমিকরা বিক্ষোভের সময় হর্ন, সাইরেন, শিস বাজিয়ে প্রতিবাদ জানায়।
জার্মানিতে ভোক্তা মূল্য ফেব্রুয়ারিতে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক বেশি বেড়ে যায়। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ৯ দশমিক ৩ শতাংশ মূল্য বৃদ্ধি ঘটে।
ইউক্রেন যুদ্ধের আগে গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল ছিল জার্মানি। কিন্তু যুদ্ধের কারণে সে সুযোগ হারায় দেশটি, ফলে বাড়তে থাকে জ্বালানি ও পণ্য উৎপাদন খরচ। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মুদ্রাস্ফীতির হার ইউরো অঞ্চলের গড় ছাড়িয়ে গেছে।
ইউরোপের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ধারাবাহিকভাবে সুদের হার বাড়িয়ে এসব খরচের চাপ সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে চলেছে।
জার্মানির জাতীয় রেল কোম্পানি ডয়চে বানের মুখপাত্র সোমবার বলেছেন, লাখ লাখ যাত্রী যারা বাস এবং ট্রেনের ওপর নির্ভরশীল তারা এই অতিরিক্ত, অতিরঞ্জিত ধর্মঘটের কারণে ভুগছেন।
এদিকে পরিবহন শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধি করতে হলে ভাড়া ও করও বৃদ্ধি করতে হবে বলে সতর্ক করেছে সংশ্লিষ্টরা। এতে নতুন করে ক্ষোভের সৃষ্টি হতে পারে।