রপ্তানিতে ডলারের বিনিময় হার বেঁধে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

রপ্তানি আয় দেশের আনার সর্বশেষ ধার্য দিনে ডলারের যে বিনিময় হার থাকবে- সেই দর অনুযায়ী নগদায়ন করে উদ্যোক্তাদের সমপরিমাণ টাকা দেওয়ার নির্দেশনা দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

পণ্য রপ্তানি করার চার মাসের (১২০ দিন) মধ্যে রপ্তানি আয় দেশে আনার বাধ্যবাধকতা, রপ্তানি আয় দেশে আসার এই সময়ের মধ্যে নগদায়ন (রিয়েলাইজ) করার বাধ্যবাধকতা সহ নানা নিয়ম বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

সোমবার (৬ মার্চ) বিনিময় হারের নিয়ম বেঁধে দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, রপ্তানি আয় দেশে আনার নির্দিষ্ট সময়ের পরও কেউ যদি বিলম্ব করে, তাহলে যে সময়ের মধ্যে রপ্তানি আয় দেশে আসার কথা ছিল ওই সময়ের শেষ দিনের ডলারের বিনিময় হার অনুযায়ী নগদায়ন হবে।  অর্থাৎ টাকার মান যদি বৃদ্ধি বা কমে যায় তাহলেও ওই দিনের বিনিময় হার অনুযায়ী নগদায় করবে বাণিজ্যিক ব্যাংক।

উদাহরণ দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ঠ বিভাগের পরিচালক ও সহকারি মুখপাত্র সারওয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেছেন, যদি কোনো রপ্তানিকারকের রপ্তানি আয় ১২০ দিনের হিসাবে গত ফেব্রুয়ারি মাসের ২৮ তারিখে আসার বা নগদায়ন করার সর্বশেষ দিন ছিল। কিন্তু কোনো কারণে তা আসেনি বা নগদায়ন করা হয়নি। কিন্তু পরের মাস অর্থাৎ মার্চ মাসের ৬ তারিখে এসেছে বা নগদায়ন করবে কোনো ব্যাংক। তখন ব্যাংকটি গত ২৮ তারিখে ডলারের যে বিনিময় হার নির্ধারণ করা ছিল বাফেদার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী; ওই দিনের বিনিময় হার মেনেই ৬ তারিখে নগদায়ন করবে ব্যাংক।

ডলারের বিনিময় হার পরবর্তিতে বৃদ্ধি পেলেও নতুন দরে নগদায়ন করতে পারবে না ব্যাংক বলেও জানিয়েছেন তিনি।

বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, সেক্ষেত্রে প্রত্যেকটি ব্যাংককে নির্দিষ্ট ওই তারিখ অর্থাৎ রপ্তানি আয় দেশে আসার সর্বশেষ তারিখ ও নগদায়নের তারিখে থাকা ডলারের বিনিময় দর একটি লেজারে বইয়ে লিপিবদ্ধ করে রাখবে এবং প্রতি মাস শেষে পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে তা বাংলাদেশ ব্যাংকে জানাতে হবে।

বিনিময় দরে ‘এডভার্স’ (মন্দজনিত প্রভাব) পরিস্থিতে এরকম নিদের্শনা মেনে চলতে হবে বলে সিদ্ধান্ত দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের উর্ধতন এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ডলারের চাহিদার বিপরীতে যোগান এখনো আশানুরূপ হয়নি। অনেক রপ্তানিকারকই দেশে রপ্তানি আয় আনছেন না যথা সময়ে। আবেদন করেও সময় চেয়ে নিচ্ছেন। এতে ডলারের সংকট বেড়ে বিনিময় দরে প্রভাব পড়ছে।

ডলারের বাড়তি দর পেতে রপ্তানিকারকরা এমনটি করছেন। তাই রপ্তানিকারকদের যথা সময়ে রপ্তানি আয় দেশে আনা ও নগদায়ন করতে বিনিময় হার কেমন হবে তা নির্দিষ্ট করে দিল বাংলাদেশ ব্যাংক।

এখন কেউ দেরি করে আনলেও বাড়তি সুবিধা পাবেন না বলেও মনে করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।