জ্বালানির অভাবে উৎপাদন বন্ধ, বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন লেবাননের অধিকাংশ এলাকা

জ্বালানির অভাবে উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে লেবাননের প্রধান দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্রে। গত শুক্রবার দেইর আম্মার ও জাহরানি নামের বিদ্যুৎকেন্দ্র দুটি বন্ধ হয়ে যায়। এর জেরে বিদ্যুৎ-বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দেশটির বেশির ভাগ অঞ্চল।

ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, দিনে মাত্র ঘণ্টা দুয়েক বিদ্যুৎ পাচ্ছে দেশটির অধিকাংশ এলাকার মানুষ। লেবাননের রাষ্ট্রীয় বিদ্যুৎ উৎপাদক সংস্থা ইলেকট্রিসাইট দু লিবান (ইডিএল) বলেছে, দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেছে।

ইডিএল বলেছে, এই দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে দেশটির ৪০ শতাংশ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হতো। বিদ্যুৎ-সংকট শুরুর পর লেবাননের জাহলে শহরের বাসিন্দাদের যতটা সম্ভব কম বিদ্যুৎ খরচ করার অনুরোধ করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রায় দুই বছর ধরে লেবাননের অর্থনৈতিক অবস্থা নড়বড়ে। দেশটির মুদ্রার মূল্যমান কমে যাওয়ায় বৈদেশিক মুদ্রার সংকট দেখা দিয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে বিভিন্ন খাতে। যেসব বিদেশি প্রতিষ্ঠান জ্বালানি সরবরাহ করে থাকে, তাদের অর্থ পরিশোধ করতে পারছে না কর্তৃপক্ষ। আর অর্থ না পাওয়ায় জ্বালানি খালাস করছে না বন্দরে ভেড়া জাহাজগুলো।

এ ছাড়া আমদানিকারকদের অর্থ দিতে না পারায় লেবাননে ওষুধের সংকট দেখা দিয়েছে। ক্যানসার ও হৃদ্‌রোগের নানা জরুরি ওষুধের সংকটে পড়েছে স্থানীয় অনেক প্রতিষ্ঠান। এর জেরে ধর্মঘট করছেন ওষুধের দোকানমালিকেরা। ফলে শুক্রবার থেকে লেবাননের ৮০ শতাংশ ওষুধের দোকান বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির ফার্মেসি মালিকদের সংগঠন।

বিদ্যুতের সমস্যা লেবাননে নতুন নয়। কয়েক দশক ধরেই নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুতের সেবা পায়নি দেশটির বাসিন্দারা। ভর্তুকিতে চলছে লেবাননের সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো। অনেক দিন ধরেই পুরো চাহিদা মেটাতে পারছে না সেগুলো। ফলে, ঘাটতি মেটাতে বেসরকারি উৎপাদনকারীদের ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে ব্যবহারকারীদের।

এদিকে দুটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধের পর জরুরি ভিত্তিতে চাহিদা মেটাতে অনেকের কাছে একমাত্র বিকল্প উৎস হয়ে উঠেছে ব্যক্তিগত জেনারেটর। তবে এই উৎসও অনেকের জন্য কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ, জেনারেটরগুলো চলে মূলত ডিজেলে। লেবাননে ডিজেলের উচ্চমূল্যের কারণে এটি সাধারণ মানুষের ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে গেছে অনেক আগেই।