‘সম্মানহানির ভয়েই ব্যক্তিজীবনকে সামনে আনি না’

এবার ২০টির মতো হবে। এর মধ্যে ‘আফটার সিক্স’, ‘আয়রনম্যান’, ‘ঘটি গরম’, ‘লাশঘর’, ‘ট্রল মফিজ’, ‘দ্য হাইজাকার’, ‘লুঙ্গীবাজ’, ‘ট্যাবলেট’সহ ১৫টি নাটকের শুটিং শেষ করেছি। সব কটি নাটকেই আলাদা আলাদা চরিত্র।

‘লাশঘর’ নাটকে ডোম, ‘আয়রনম্যান’-এ কম্পিউটার কম্পোজার, ‘দ্য হাইজাকার’ নাটকে ছিনতাইকারী, ‘ট্যাবলেট’ নাটকে একজন মোটা মানুষ। এই ঈদে এ ধরনের একাধিক চরিত্রে দেখা যাবে। আমার সব কটি নাটকই চরিত্রবেজড গল্প। ভার্সেটাইল কাজ করার চেষ্টা করছি।

মিশু সাব্বির
মিশু সাব্বির

ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। রাস্তায় বের হলেই দেখা যায়। ১৪ মে ঈদুল ফিতর ছিল। আমি ১৬ মে থেকেই এসব কাজের প্রস্তুতি নিতে শুরু করি। খেয়াল করলে দেখবেন, নাটকের চরিত্রগুলো আমাদের আশপাশের চেনাজানা। চরিত্রগুলো চেনা হলেও করতে বেশ বেগ পেতে হয়েছে।

নাটকের দৃশ্য ধারণের সময় মিশু সাব্বির

আমার ১৬ বছরের অভিনয়জীবনের বড় ক্রাইসিস গেছে ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত। কারণ, তত দিনে দর্শকের রুচির পরিবর্তন হয়ে গেছে। শুরু থেকে যে ধারার কাজ করে আসছিলাম, দর্শক রুচির পরিবর্তন হওয়ার কারণে ওই সময়টায় দর্শক ধরতে ব্যর্থ হই। দর্শক যখন যেটা পছন্দ করছেন, সেটাই করা উচিত। দর্শকের সঙ্গে শিল্পীর মনস্তাত্ত্বিক সংযোগ থাকতে হবে। এখনকার দর্শক অল্প সময়েই বিনোদন চান। এই অস্থির সময়ে যান্ত্রিক জীবনে মানুষ সিরিয়াস কিছুর চাইতে বিনোদন নিতেই পছন্দ করেন বেশি।

ভিউ মানেই নাটকটি দর্শক দেখছেন। এটা অস্বীকার করা যাবে না। নাটকে যাঁদের ভিউ হচ্ছে না, তাঁরা এখনো হয়তো এই প্রজন্মের সঙ্গে সংযোগ তৈরি করতে পারেননি। তবে তাঁদের জন্য এটি কোনো দোষের নয়। দর্শকের রুচির পরিবর্তন হয়ে গেছে। আমার কাছে মনে হয় বর্তমানে ভালো গল্পের ভালো নাটকে ভিউ কম।

প্রেম অথবা অপ্রেমের গল্প নাটকে তানজিকা ও মিশু সাব্বির

প্রেম অথবা অপ্রেমের গল্প নাটকে তানজিকা ও মিশু সাব্বির

আপনি বরিশাল, নোয়াখালী, কুষ্টিয়া, ময়মনসিংহ, পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ভাষায় অভিনয় করেন। সমস্যা হয় না?

কোনো কোনো সময় তো হয়ই। যে অঞ্চলের ভাষায় অভিনয় করি, শুটিংয়ের আগে ওই অঞ্চলের পরিচিত মানুষের সঙ্গে আড্ডা দেওয়ার চেষ্টা করি। আড্ডা থেকেই ভাষা ধারণ করি। ইউটিউবেরও সাহায্য নিই। ‘ব্যাচেলর পয়েন্ট’ নাটকে আমি নোয়াখালীর ভাষায় অভিনয় করেছি। আমি বরিশালের মানুষ। নোয়াখালীর ভাষায় কাজ করতে গিয়ে প্রথম দুই লটের শুটিংয়ে খুবই অসুবিধা হয়েছে। শট দিতে গিয়ে কতবার যে এনজি হয়েছে!

তারকারা স্ত্রী, সন্তানদের ছবি প্রকাশ করতে চান না। আপনিও ব্যতিক্রম নন। কিন্তু তারকাদের ব্যক্তিজীবন সম্পর্কে ভক্তরা জানতে চান।

ব্যক্তিগত জীবনের সঙ্গে পেশার জায়গাটা এক করতে চাই না। ব্যক্তিজীবনটা একান্তই আমার। তবে এটা ঠিক যে ভক্ত-দর্শকেরা তারকাদের ব্যক্তিজীবন নিয়ে খুবই আগ্রহী। কিন্তু আবার এটাও ঠিক যে মিডিয়ার মানুষের ব্যক্তিজীবনকে অনেক ভক্ত-দর্শক সম্মান করতে চান না। মেনে নিতে পারেন না। সম্মানহানির ভয়েই ব্যক্তিজীবনকে সামনে আনি না।

মিশু সাব্বির

মিশু সাব্বির

এখন ছোট পর্দায় অনেকেই সহশিল্পী বেছে বেছে কাজ করেন।

যাঁরা করছেন তাঁদের ব্যাপারে কিছুই বলব না। তবে আমি সহশিল্পী নিয়ে মাথায় ঘামাই না। যে কারোর সঙ্গেই কাজ করি। কাজের সময় গল্প ও চরিত্র নিয়ে ভাবি। যে সহশিল্পীই থাকুক, তাঁকে সঙ্গে নিয়ে কাজটি ভালো করার চেষ্টা করি। সহশিল্পী হিসেবে গাছের সঙ্গে কাজ করতেও স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।

একটি নাটকের দৃশ্যে শহীদুজ্জামান সেলিম ও মিশু সাব্বির