সু চির বিচার শুরু আজ

জাতিসংঘ ও অ্যামনেস্টির আপত্তিকে কোনো গুরুত্ব না দিয়ে অং সান সুচির বিচার শুরু করেছে মিয়ানমারের সামরিক সরকার। মামলার প্রথম দফার শুনানি চলবে জুলাই পর্যন্ত। গত পহেলা ফেব্রুয়ারি অং সান সুচি ও তার দলের শীর্ষ নেতাদের আটক করে ক্ষমতা দখলে নেয় মিয়ানমারের সেনাবাহিনী। তারপর থেকে দেশ জুড়ে চলছে সামরিক সরকারের অপসারণ এবং সুচিসহ সব রাজনৈতিক নেতাকে মুক্তি দিয়ে গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার দাবিতে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ। খবর ডয়চেভেলের

বিক্ষোভকারীদের ওপর সেনা ও অন্যান্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হামলায় এ পর্যন্ত অন্তত ৮৬২ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স (এএপিপি)। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে চার মাসে মিয়ানমারে কমপক্ষে ছয় হাজার বিক্ষোভকারী গ্রেপ্তারও হয়েছেন। বিক্ষোভ দমনের পাশাপাশি নোবেলজয়ী সুচির বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ তুলে তার বিচার শুরুর উদ্যোগও নিয়েছে নির্বাচিত সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসা সামরিক সরকার।

শান্তিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সু চির বিরুদ্ধে আরো কিছু গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ, সরকারি গোপনীয়তা আইন ভঙ্গ ও ইয়াংগনের সাবেক মুখমন্ত্রীর কাছে থেকে ছয় লাখ ডলার ও ১১ দশমিক চার কেজি সোনা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগও রয়েছে। তবে সু চি কোনো অন্যায় করেননি বলে দাবি করেছেন তার আইনজীবীরা। তার প্রধান আইনজীবী খিন ময়ুং জ সর্বশেষ ওই দুর্নীতির অভিযোগকে ‘হাস্যকর’ বলে অভিহিত করেছেন।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের বিভিন্ন পোস্ট থেকে জানা গেছে, আজ সোমবার গণতন্ত্রপন্থি প্রতিবাদকারীরা দেশটির প্রধান শহর ইয়াংগনের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ মিছিল করেছে, তাদের অনেকে ‘বিপ্লবী যুদ্ধ, আমরা অংশ নিচ্ছি’ বলে শ্লোগান দেয়। কিছু আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, তারা আজ সোমবার চে গুয়েভারার জন্মদিনে ধারাবাহিক ধর্মঘট ও প্রতিবাদ করার পরিকল্পনা করেছেন। ল্যাটিন আমেরিকান বিপ্লবী নেতা চে তার মৃত্যুর পর বিপ্লবের আন্তর্জাতিক প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।

এ দিকে মিয়ানমারজুড়ে সহিংসতা তীব্র হয়ে উঠেছে মন্তব্য করে গত শুক্রবার জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার মিশেল বাশেলেত সেনাবাহিনীর ভারী অস্ত্র ব্যবহারের নিন্দা করেছেন। মিয়ানমারে জান্তা সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বাশেলেতের এ বিবৃতি প্রত্যাখ্যান করে একে ‘পক্ষপাতদুষ্ট’ বলে অভিহিত করেছে।

মিয়ানমারের জান্তা নিয়ন্ত্রিত গণমাধ্যম ২৫ জন নির্মাণ শ্রমিককে হত্যার জন্য দেশটির একটি জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠীকে দায়ী করেছে। গত মাসে দেশটির পূর্বাঞ্চল থেকে ৪৭ জন শ্রমিকের একটি দলকে অপহরণের পর তাদের মধ্য থেকে ২৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তারা। এই অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্যের জন্য কারেন ন্যাশনাল ডিফেন্স অর্গানাইজেশনের (কেএনডিও) সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।