স্পেনে আট দশক আগের গণকবর থেকে উত্তোলিত দেহাবশেষ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর

স্বজনের দেহাবশেষের জন্য আট দশকের অপেক্ষা। স্পেনে স্বৈরশাসক ফ্রাঙ্কোর নিপীড়ন-নির্যাতনে প্রাণ হারানোদের দেহাবশেষ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতে এখন তৎপর হয়েছে প্রশাসন। গণকবর থেকে দেহাবশেষ তুলে ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে সেগুলো হস্তান্তর করা হচ্ছে পরিবারের সদস্যদের কাছে। ২০১৪ সালে কাজ শুরুর পর এ পর্যন্ত ৭০০টি গণকবর থেকে অন্তত ১১ হাজার কঙ্কাল উদ্ধার করা হয়েছে। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।

মূলত, স্পেনের স্বৈরশাসক জেনারেল ফ্রাঙ্কোর আমলে তার একনায়কতন্ত্রের বিরোধীদেরই ছুঁড়ে ফেলা হতো কারাগারে। খাবার-পানি না দিয়ে ধীরে ধীরে ঠেলে দেয়া হতো নির্মম মৃত্যুর দিকে। পরবর্তীতে তাদেরকে গণকবর দেয়া হতো। এসব দেহাবশেষ পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিতেই উদ্যোগ নেয়া হয় ৮ বছর আগে।

ভুক্তভোগী এক পরিবারের সদস্য বলেন, আমাদের কাছে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার দাদার বাবাকে সেসময় প্রাণ দিতে হয়েছিল। দাদার খুব কাছাকাছি থাকার সুবাদে শুনেছি, সে সময়টাতে উনি ঠিক কতটা দুঃসময় পার করেছেন। তিনি জানতেন না তার বাবা কোথায়। এখন তার কাছে দেহাবশেষটি ফিরিয়ে দিতে পারলে উনি হয়তো কিছুটা শান্তি পাবেন।

স্পেনের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ফার্নান্দো ইটজিবারিয়া বলেন, ল্যাবে ফরেনসিক পরীক্ষার মাধ্যমে তাদের লিঙ্গ, উচ্চতা, ডিএনএ পরীক্ষাসহ নানা বিষয় নির্ধারণ করা হয়। পরবর্তীতে কোনো পরিবারের সদস্য পাওয়া গেলে তাদের কাছে হস্তান্তর করি। ক্ষুধা, তৃষ্ণায় ধুঁকে ধুঁকে প্রাণ হারিয়েছিলেন তারা। সেসময় আশঙ্কাজনক হারে যক্ষ্মাও ছড়িয়ে পড়েছিল। তাই মরদেহগুলো গণহারে পুঁতে ফেলা হয়।

১৯৩৬ থেকে ১৯৩৯ সাল পর্যন্ত স্পেনে চলা গৃহযুদ্ধে প্রাণ হারায় ৫ লাখেরও বেশি মানুষ। ইতিহাসবিদদের মতে, সেসময় নিখোঁজ ছিলেন আরও এক লাখের বেশি। ধারণা করা হয়, নিখোঁজ অনেককেই দেয়া হয়েছিল গণকবর। আর সেসব গণকবর থেকেই একে উঠিয়ে আনা হচ্ছে সেসব নির্যাতিতদের দেহাবশেষ।