আমার মনে হয় দলের মধ্যে খোলামেলা আলোচনা হওয়া উচিত। একটা দল হিসেবে খেললে চাপের মুহূর্তে সেটি অনেক বড় শক্তি হয়ে দাঁড়ায়। সেটি কতটুকু করতে পারছি, ভাবতে হবে।
এখন বোধ হয় সময় এসেছে অধিনায়কত্ব থেকে আমাদের একসময়ের সেরা ব্যাটসম্যানকে মুক্তি দেব কি না—এটা ভাবার। নিশ্চিতভাবেই বলা যায়, অধিনায়কত্ব মুমিনুলের ওপর চাপ ফেলছে। এবং ওর ব্যাটিংয়ে সেটি স্পষ্ট। আমার মনে হয়, ওকে এ দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হলে সেটি ভালো একটি সিদ্ধান্ত হবে।
সাকিবের মতো একজন খেলোয়াড় থাকার পরও তাকে অধিনায়ক হিসেবে ব্যবহার না করার মতো বোকামো আর কিছু হতে পারে না, অন্তত আমার তাই মনে হয়। ওর যে পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা, অভিজ্ঞতা, দলে অবস্থান, পারফরম্যান্স—সবকিছু মিলিয়ে দলটা ওর হাতে দিলে ভালো একটা অবস্থানে নিয়ে যেতে পারবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরেই গুরুত্বপূর্ণ একটি সিদ্ধান্ত হতে পারে এটি।
সাকিবের উচিত হবে দলের দায়িত্ব নেওয়া। আশা করি, ও আরও দুই-তিন বছর টেস্ট ক্রিকেট খেলবে। সে সামর্থ্য ওর আছে। খুব করে আশা করব, সাকিব যাতে দলের দায়িত্বটা নিয়ে পুনর্বিন্যাস করে। ও যখনই অধিনায়ক হবে, দলের সংস্কৃতিতে, দৃষ্টিভঙ্গিতে, লক্ষ্য নির্ধারণে পরিবর্তন আসবে। ব্যক্তিগত ও সামগ্রিকভাবে দলটি আরেকটা পর্যায়ে যাওয়ার সুযোগ পাবে। একটা সময় শুনেছি, কেউ অধিনায়ক হতে চায় না, আবার বোর্ড কাউকে দিতে চায় না। তবে দলের স্বার্থে এসবের ঊর্ধ্বে উঠে আমাদের প্রথমেই এ কাজটা করা উচিত।
খেলোয়াড়দের সাইকোলজিটা টিম ম্যানেজমেন্টের বোঝা খুব দরকার। কোন পরিস্থিতিতে কে সাড়া দেয়, দল কখন মানসিকভাবে ভালো থাকে, কখন থাকে না—এসব বের করে কাজ করা দরকার। ধারণাবশত অনেক সময় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। টিম ম্যানেজমেন্টে এ কারণেই দেশীয় লোক দরকার। আমাদের ছেলেরা পরিবেশগত কারণেও নিজেরা সিদ্ধান্ত নিতে অভ্যস্ত না, বা নেতৃত্বগুণের যথেষ্ট অভাব আছে অন্যান্য দেশের তুলনায়। আমাদের খেলোয়াড়দের সামলাতে তাই অনেক সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। অনুমাননির্ভর কাজ করলে হবে না। দেশীয় কোচ মানে শুধু অনুবাদ করতে পারে, এমন না। আরও অনেক বেশি কাজ করতে পারে, এমন কাউকে দরকার।