সংবর্ধনায় আপ্লুত মেয়েরা

মেয়েরা দল বেঁধে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ঢুকছেন—প্রথম দেখায় উচ্ছল একদল তরুণীই মনে হচ্ছিল তাঁদের। হেসে গড়িয়ে পড়ছেন একজন আরেকজনের গায়ে। এই উচ্ছল মেয়েরাই বাংলাদেশের একেকটা রত্ন। যাঁরা কিছুদিন আগেই দক্ষিণ এশীয় ফুটবলের শ্রেষ্ঠত্ব এনে দিয়েছেন বাংলাদেশকে।

তাঁদের সেই অর্জনকে আরো একবার তুলে ধরতে এবং জয়ের আনন্দটা আরো এক ধাপ বাড়িয়ে দিতে বসুন্ধরা গ্রুপ আয়োজন করেছিল সংবর্ধনার। এই অনুষ্ঠানে এসে শাহেদা, তহুরাদের মুখে গর্বের হাসি বসুন্ধরা কনভেনশন সিটির পুরো হল আলোকিত করছিল যেন। বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীরের হাত থেকে সংবর্ধনার ক্রেস্ট এবং এক লাখ টাকার খাম হাতে নিয়ে লেফট ব্যাক শামসুন্নাহার তো বলেই দিলেন, ‘বসুন্ধরা গ্রুপ এভাবে যদি সব সময় আমাদের পাশে থাকে তবে আমরা ফুটবলে আরো ট্রফি এনে দিতে পারব।’

ফাইনালের দিন মাঠভর্তি দর্শক যেভাবে তাঁদের অনুপ্রাণিত করেছিল এবং শিরোপা জয়ের পরও যেভাবে প্রশংসায় ভাসছেন এর জন্য ফুটবল অনুরাগীদের ধন্যবাদ জানাতে ভোলেননি দলের এই সিনিয়র খেলোয়াড়। মিডফিল্ডার মনিকা চাকমা ঠিক করে ফেলেছেন উপহারের টাকা মা-বাবার হাতেই তুলে দেবেন, ‘টাকাটা আমার পরিবারের কাজে লাগবে। তাই মা-বাবার হাতেই এটা তুলে দেব। বসুন্ধরা গ্রুপকে এ জন্য অনেক ধন্যবাদ।’

মনিকাসহ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের অনেক ফুটবলার লিগে খেলেছেন বসুন্ধরা কিংসের হয়ে। বসুন্ধরা গ্রুপের সঙ্গে তাঁদের একাত্মতাও তাই বেশি। বসুন্ধরা কনভেনশন সেন্টারের এই আয়োজনে আসা তাঁদের কাছে অনেকটা প্রিয়জনদের কাছে আসার মতোই। কিংসের হয়ে লিগ মাতানো তহুরা খাতুন এখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের মূল স্ট্রাইকার। তহুরা আপ্লুত তাঁদের সংবর্ধনায় ফুটবলের এত মানুষকে পেয়ে, ‘এখানে সবাই আমাদের অভিনন্দন জানাতে এসেছেন, সবাই মেয়েদের নিয়ে ভালো ভালো কথা বলছেন, এটা খুব ভালো লাগছে। ফাইনালের পর আবার এত আনন্দ করতে পারলাম এখানে এসেই।’ ফাইনালে যাঁর গোলে বাংলাদেশ ভারতকে হারিয়েছিল সেই আনাই মোগিনির কণ্ঠে যেন সেদিনের উচ্ছ্বাসের বিচ্ছুরণ, ‘বিজয়ের মাসে বাংলাদেশকে এমন একটা জয় এনে দিতে পেরেছি, এটা আমাদের জন্য অনেক গর্বের। আমি গোল করেছিলাম, তবে সবাই চেষ্টা করেছি ম্যাচটা জিততে। আনন্দটা তাই সবার সমান।’ বসুন্ধরা গ্রুপ মেয়েদের ফুটবলের পাশে থাকবে শুনে সেই আনন্দটাই আরো দ্বিগুণ হয়েছে যেন। সবার হয়ে কোচ গোলাম রব্বানী যেমন বলেছেন, ‘আমরা তো এটাই চেয়েছি।’