মনপুরা মেঘনার অব্যাহত ভাঙনের ফলে ছোট হয়ে যাচ্ছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের রূপালী দ্বীপ মনপুরা। ভোলা জেলার মূল ভূখণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন চারপাশে মেঘনা নদী দ্বারা বেষ্টিত সবুজ সমারোহে ঘেরা মনপুরা দেড় লক্ষাধিক লোকের বসবাস। ইউনিয়নের সংখ্যা চার।
মেঘনার ভাঙনে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, পর্যটন স্থান, বাজার, মসজিদ, মন্দিরসহ কয়েক বছরে বেশ কয়েকটি গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ইতিমধ্যে পর্যটনের আকর্ষণীয় স্থান মনপুরা ফিশারিজ, নাইবের হাট বাজার, হাজির হাট ইউনিয়নের সোনারচর, চরজ্ঞান, দাসের হাট, মনপুরা ইউনিয়নের পূর্বকুলাগাজী তালুক, সীতাকুণ্ড, ঈশ্বরগঞ্জ গ্রাম, উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাস্টারহাট বাজারসংলগ্ন পশ্চিম পাশ, দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের রহমানপুর গ্রাম নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে।
সরজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, হাজির হাট ইউনিয়নের চৌধুরী বাজারসংলগ্ন পূর্ব-পশ্চিম পাশে মেঘনা কেবলই দ্বীপের ভেতরে ঢুকছে। নাইবের হাট, সোনারচর ও চরজ্ঞান মুক্তিযোদ্ধা আ. লতিফ ভুঁইয়ার বাড়িসহ অধিকাংশ গ্রাম মেঘনায় বিলীন হয়ে গেছে। মনপুরা ইউনিয়নের আন্দিড়পাড়, মাছুয়াখালি, কাচারির ডগি, সম্পূর্ণ এবং ঈশ্বরগঞ্জ মৌজার অধিকাংশ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। উত্তর সাকুচিয়া ইউনিয়নের মাস্টারহাট বাজারসংলগ্ন পশ্চিম পাশ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। মাস্টারহাট বাজারসংলগ্ন ব্রিজটি নদীর গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। এভাবে ভাঙতে থাকলে এক বছরের মধ্যে মাস্টারহাট বাজারটি সম্পূর্ণ নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ-পূর্ব পাশ ও রহমানপুর গ্রাম মেঘনার ভাঙনের তীব্রতা বেড়েছে। ভাঙনে কেবলই ছোট হয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ সাকুচিয়া ইউনিয়ন।
এ ব্যাপারে হাজির হাট ইউনিয়নের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মো. নিজামউদ্দিন হাওলাদার বলেন, মনপুরাকে নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য আবদুল্যাহ আল ইসলাম জ্যাকব এমপির সঙ্গে আলাপ করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। নদীভাঙনের হাত থেকে মনপুরাকে বাঁচানোর জন্য ব্জনগণকে সঙ্গে নিয়ে চেষ্টা করে যাব। উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেলিনা আকতার চৌধুরী বলেন, মেঘনার ভাঙনে মনপুরা ছোট হয়ে যাচ্ছে। মেঘনার ভাঙন রোধে ইতিমধ্যে উত্তর মাথায় নদীর তীররক্ষা প্রকল্প কাজ আমরা শেষ করেছি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের ডিভিশন-২ নির্বাহী প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ জানান, ইতিমধ্যে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধগুলো নির্মাণ করেছি। আমাদের কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় স্থায়ীভাবে নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য ‘ভোলা জেলার মুজিবনগর ও মনপুরা উপজেলা বন্যানিয়ন্ত্রণ বাঁধ পুনর্বাসন নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও তীর সংরক্ষণ’ নামে ১ হাজার ১৯৩ কোটি টাকার প্রকল্প তৈরি করে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। প্রকল্পটি যাচাই-বাছাই শেষে প্লানিং কমিশনে যাবে। প্রকল্পটি অনুমোদন হলেই স্থায়ীভাবে নদীভাঙনের হাত থেকে মনপুরাকে রক্ষা করতে পারব।