বহিষ্কৃত হয়েও বিভাগের কর্মশালা থেকে সনদ পেলেন ছাত্রলীগের সদস্য

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীদের বহিষ্কার যেন শুধু নামেই। বহিষ্কৃত ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা পরীক্ষা দেওয়া, ক্লাস ও হলে থাকাসহ বিভাগের অধিকাংশ কাজেও অংশ নেন। এবার বিভাগের ব্যানারে আয়োজিত এক কর্মশালায় অংশ নেওয়ার পাশাপাশি সনদও নিয়েছেন বহিষ্কৃত ছাত্রলীগের সদস্য ইকরামুল হক রিয়াদ।

গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়রে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ২ নম্বর গ্যালারিতে ‘মাস্টারদা সূর্যসেন স্মারক বক্তৃতা’ শীর্ষক এক কর্মশালার আয়োজন করা হয়। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শিরীণ আখতার। আয়োজক ছিল ইতিহাস বিভাগ। বিভাগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুম। কর্মশালা শেষে ইতিহাস বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তরের ৪৬ জন শিক্ষার্থীকে ইতিহাস ও ঐতিহ্য শীর্ষক সনদ দেওয়া হয়। ইকরামুল হকও সনদ নিয়েছেন। ইকরামুল হককে ‘হিস্টোরি অ্যান্ড হেরিটেজ রিচার্স’ শীর্ষক সনদ দেওয়া হয়।

প্রচলিত নিয়ম অনুযায়ী কোনো শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হলে বিভাগ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ধরনের কার্যক্রমে অংশ নিতে পারবেন না। কিন্তু ইকরামুল হক বিভাগের কর্মশালায় অংশ নেন।

জানতে চাইলে ইতিহাস বিভাগের সভাপতি আবদুল্লাহ আল মাসুম সমকালকে বলেন, ‘বহিষ্কৃত হওয়ার চিঠি পেয়ে আমরা তার অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম বন্ধ রেখেছি। এই কর্মশালা বিভাগের সঙ্গে জড়িত নয়। শিক্ষক আনোয়ারুল ইসলাম ব্যক্তিগতভাবে সংগঠনটি পরিচালনা করেন। সেই সংগঠনের কর্মশালা ছিল।’

আনোয়ারুল ইসলাম সমকালকে বলেন, ‘এটি বিভাগের কোনো অনুষ্ঠান নয়। আমি ব্যক্তিগতভাবে একটি গবেষণা গ্রুপ পরিচালনা করছি। সেখানে তাকে সনদ দেওয়া হয়েছিল। সে বহিষ্কৃত হয়েছে তা আমার জানা ছিল না।’

ইকরামুল হক চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সদস্য। তিনি ইতিহাস বিভাগের ২০১৭-১৮ বর্ষের শিক্ষার্থী। তিনি ছাত্রলীগের ভার্সিটি এক্সপ্রেস গ্রুপের অনুসারী হিসাবে ক্যাম্পাসে পরিচিত।

গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে শাখা ছাত্রলীগের দুটি উপগ্রুপ। এতে উভয় পক্ষের ১১ জন আহত হন। আহত হয়েছিলেন সহকারী প্রক্টর শহিদুল ইসলামও। এ ঘটনায় ইকরামুল হককে এক বছরের জন্য বহিষ্কার করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

তদন্ত কমিটির ভাষ্যমতে, দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া, দোকানপাঠ ভাঙচুর, ভীতিকর পরিবেশ সৃষ্টি, পরিকল্পিতভাবে বৈদ্যুতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় ইকরামুল হক জড়িত ছিলেন।