রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনে তার আগ্রাসনের জন্য পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞাকে`যুদ্ধ ঘোষণার মতো’ বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ তবে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ, এটি সে পর্যন্ত গড়ায়নি’।
পুতিন সতর্ক করে আরো বলেছেন, ইউক্রেনের আকাশে উড্ডয়ন নিষিদ্ধ এলাকা (নো-ফ্লাই জোন) চাপিয়ে দেওয়ার যে কোনও প্রচেষ্টাকে সশস্ত্র সংঘাতে অংশগ্রহণ হিসাবে দেখা হবে।
তিনি রাশিয়ায় জরুরি অবস্থা বা সামরিক আইন চালু করা নিয়ে যেসব গুঞ্জন শুরু হয়েছে তা-ও নাকচ করে দিয়েছেন।
মস্কোর কাছে রাষ্ট্রীয় এয়ারলাইন অ্যারোফ্লতের এক প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে একদল এয়ার হোস্টেসের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় পুতিন উল্লিখিত মন্তব্যগুলো করেন।
১০ দিন আগে ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে পশ্চিমা দেশগুলো একে একে রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। এর মধ্যে রয়েছে পুতিনের বিদেশে থাকা সম্পদ জব্দ করা এবং সুইফ্ট আন্তর্জাতিক অর্থ পরিশোধ ব্যবস্থা থেকে বেশ কয়েকটি রুশ ব্যাংককে বাদ দেওয়া। এছাড়াও অনেক বহুজাতিক সংস্থা রাশিয়ায় কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। শনিবার রাশিয়ায় বাণিজ্যিক কার্যক্রম স্থগিত করা সর্বশেষ বৈশ্বিক ব্র্যান্ড ছিল জারা, পেপ্যাল এবং স্যামসাং।
সাম্প্রতিকতম প্রকাশ্য এসব মন্তব্যে পুতিন ইউক্রেনের যুদ্ধকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করেন। রুশ প্রেসিডেন্ট তার এই দাবির পুনরাবৃত্তি করেছেন যে তিনি ইউক্রেনের ‘অসামরিকীকরণ এবং অনাৎসিকীরণের’ মাধ্যমে সেখানকার রুশভাষী সম্প্রদায়কে রক্ষা করতে চাইছেন।
রাশিয়ার সামরিক অভিযান প্রত্যাশার চেয়ে কম ভালো চলছে- পশ্চিমা প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের এ অভিমতের প্রতিক্রিয়ায় পুতিন বলেন, ‘আমাদের সেনাবাহিনী সব কাজ সম্পন্ন করবে। আমার এ নিয়ে কোনোপই সন্দেহ নেই। সবকিছু পরিকল্পনা অনুযায়ী চলছে। ’
তিনি আরো বলেন, অনেকে দাবি করলেও ইউক্রেনে যাওয়া রুশ সেনাদের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে নাম লেখানো কোনো যোদ্ধা নেই। শুধু পেশাদার সেনারাই লড়াইয়ে অংশ নিচ্ছে।
রাশিয়ার নেতা আরো বলেন, ইউক্রেনে একটি ‘নো-ফ্লাই জোন’ আরোপের প্রচেষ্টাকে রাশিয়া সামরিক সংঘাতমূলক একটি পদক্ষেপ হিসাবে বিবেচনা করবে। এজন্য যারা দায়ী তাদের শত্রু যোদ্ধা হিসাবে গণ্য করা হবে।
পুতিন বলেন, ইউক্রেনের বর্তমান নেতৃত্বকে বুঝতে হবে, তারা যা করছে তা চলতে থাকলে ইউক্রেন রাষ্ট্রের ভবিষ্যত ঝুঁকিতে পড়বে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের আকাশে ‘নো-ফ্লাই জোনের’ প্রস্তাব নাকচ করার জন্য ন্যাটোর নিন্দা করেছেন। পশ্চিমা নেতারা বলছেন যে এটি চালু করা হলে উত্তেজনা বেড়ে গিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে তাদের যুদ্ধ লাগার অবস্থা হবে।