সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, দরকষাকষি করে কোনো লাভ নেই। দরকষাকষিতে সরকার সংবিধান থেকে নড়বে না।
এ সময় বিএনপিকে নির্বাচনে আসার অনুরোধ জানান কাদের।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সম্পাদকমণ্ডলীর সঙ্গে সহযোগী সংগঠনগুলোর বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।
ইভিএম নিয়ে আপত্তি কোথায় প্রশ্ন তুলে কাদের বিএনপির উদ্দেশে বলেন, পৃথিবীর বহু দেশে ইভিএম-এ নির্বাচন হচ্ছে। আপনারা কি নির্বাচনে কারচুপি করতে চান? কারচুপি-জালিয়াতি এড়ানোর জন্যই এই ইভিএম ব্যবস্থা হচ্ছে। এতে আপনাদের আপত্তি থাকবে কেন? পদত্যাগ কেন করতে হবে? কী কারণে? আমরা কি অন্যায় করেছি?
তিনি আরও বলেন, এ ধরনের কথা দেশের মানুষ ১৩ বছর ধরে শুনছে। গত নির্বাচনের সময় বিএনপি এবং তাদের জোটের হাঁকডাক শুনেছি। পানি ঘোলা করে অবশেষে তারা ডায়ালগে এসেছেন এবং নির্বাচনেও অংশ নিয়েছেন। এবারও সেই একই কথা নতুন করে বলছে। বিএনপি নেতারা ভালো করে জানেন, দলের অস্তিত্ব রক্ষায় তাদের আসতেই হবে। তাদের হাতে কোনো বিকল্প নেই।
কাদের বলেন, আগামী ১৭ মে বঙ্গবন্ধুকন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে সকাল ১১টায় বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। নেত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসের গুরুত্ব অনুধাবন করে এবং বর্তমান সময়ে নেত্রীর যে অগ্রগতির তুঙ্গে, জনপ্রিয়তা, আজ সারা বিশ্বে তার প্রশংসা রয়েছে। আমরা যথযোগ্য মর্যাদায় আমাদের নেত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস পালন করবো।
কুমিল্লায় এলডিপি নেতার ওপর হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগকে দায়ী করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, এ হামলার ঘটনায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যথাযথ তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেবে। শেখ হাসিনার আমলে কোনো ধরনের অপকর্ম, অনিয়মের ব্যাপারে কাউকে ছাড় দেওয়া হয়নি। এখানেও কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না, এতে কোনো সন্দেহ নেই। এ ঘটনায় ফখরুল সাহেব সরকারের অন্ধ সমালোচনা করেছেন; স্বভাবসুলভ বরাবরের মতো। লক্ষণীয় বিষয় হলো, এলডিপি মহাসচিব দুজন রাজনৈতিক কর্মী—আমাদের শ্রমিক লীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুজন কর্মীকে গুলিবিদ্ধ করেছেন। যারা এখনো হাসপাতালে। এ বিষয়ে ফখরুল সাহেব একটি শব্দও বলেননি। পুরোপুরি চেপে গেছেন। এটা কি রাজনৈতিক সততা? এটা গণতন্ত্র?
এ ধরনের সত্য গোপনের রাজনীতিতে হত্যা-সন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেওয়া এবং লালনের কাজটি তারা করে আসছেন তাদের জন্মলগ্ন থেকে। ক্ষমতায় থাকাকালে তারা এটি করেছেন। ফখরুল সাহেব আজকাল সব কিছু একচক্ষু হরিণের মতো দেখেন। না হলে এলডিপি মহাসচিবের গুলি ছোড়ার বিষয়টি তিনি দেখতে পেতেন। তার বিবৃতি জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। তিনি আরেকটি বিষয় আবিষ্কার করেছেন, সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে নাকি এ হামলার ইন্ধন জোগানো হয়েছে। জনগণের ধারণা, ক্ষমতা লিপ্সায় অন্ধ হয়ে বিএনপি মহাসচিব পলিটিক্যাল হ্যালুসিনেশনে ভুগছেন। ক্ষমতায় থেকে সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে হামলার পরিকল্পনা করা, সন্ত্রাস চালানো, গ্রেনেড হামলা, আগুন সন্ত্রাস—এসব তাদেরই চর্চা। আওয়ামী লীগ এসব অপচর্চা-অপরাধে বিশ্বাসী না। সন্ত্রাসের পথ তারাই বেছে নেয় যারা ভোটের ওপর আস্থা হারিয়ে নির্বাচন বিমুখ হয়। ষড়যন্ত্র তাদের হাতিয়ার। তারা গণতন্ত্রের পথে না হেঁটে ক্ষমতায় যেতে চোরাগলি খুঁজে বেড়ায়, বলেন কাদের।
শেখ হাসিনার উন্নয়নের রাজনীতি বিএনপির মিথ্যাচারের রাজনীতির মুখোশ উন্মোচন করে দিয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের পদত্যাগ নয়, সংবিধান অনুযায়ী যথা সময়ে নির্বাচন হবে। শেখ হাসিনা সরকার কমিশনকে একটি অবাধ-সুষ্ঠু-নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে সহযোগিতা করবে। সরকারের কোনো কর্তৃত্ব থাকবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা দলগতভাবে চাই ইভিএম-এ নির্বাচন হোক। এটাও আমরা বলতে পারবো না? নির্বাচন কমিশন তাদের সক্ষমতা অনুযায়ী করবে।