তারুণ্যের চোখে শেখ হাসিনা

প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ। ১৯৪৭ সালের এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় তিনি জন্মগ্রহণ করেন। স্বাধীন বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছার জ্যেষ্ঠ সন্তান তিনি।

আধুনিক বাংলাদেশের রূপকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শৈশব কেটেছে মধুমতী নদী বিধৌত টুঙ্গিপাড়ায়। ’৫৪-এর নির্বাচনের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে ঢাকায় চলে আসেন শেখ হাসিনা।

রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন ছাত্রজীবন থেকেই। রাজনীতি করতে গিয়ে তিনি যেমন পেয়েছেন মানুষের ভালোবাসা, ঠিক তেমনই হয়েছেন প্রতিহিংসার স্বীকার। এ জন্য তিনি করেছেন কারাভোগ, হয়েছেন একাধিকবার গৃহবন্দীও। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট রাতে ঘাতকদের গুলিতে হারিয়েছেন প্রিয়জনদের। তখন বিদেশে ছিলেন শেখ হাসিনা ও ছোট বোন শেখ রেহানা।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারকে হত্যার প্রায় ৬ বছর পর ১৯৮১ সালে দলের সম্মেলনে শেখ হাসিনাকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। ওই বছর ১৭ মে দেশে ফিরেই দলীয় প্রধানের দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসে। প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন শেখ হাসিনা। এরপর ২০০৮ সালে দ্বিতীয়, ২০১৪ সালে তৃতীয় ও ২০১৮ সালের নির্বাচনের মাধ্যমে চতুর্থবারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন তিনি।

বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ঢাকার আজিমপুর বালিকা বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন ঢাকার বকশীবাজারের পূর্বতন ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজ (বর্তমান বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা মহাবিদ্যালয়) থেকে। স্নাতক পাস করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। ১৯৬৭ সালের ১৭ নভেম্বর পরমাণুবিজ্ঞানী ড. এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সঙ্গে শেখ হাসিনা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। স্বাধীনতাযুদ্ধ চলাকালে গৃহবন্দী থাকা অবস্থায় ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্ম হয়। ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্ম নেন তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদ পুতুল।

 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব সময় নতুন প্রজন্ম ও তারুণ্যের কথা ভেবেছেন। এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপকমিটির সদস্য সৌরভ কুমার সাহা বলেন, তারুণ্যের শক্তির উপর তিনি বরাবরই আস্থাশীল। সর্বশেষ আওয়ামী লীগের কমিটি এবং বর্তমান মন্ত্রীসভার দিকে লক্ষ্য করলে সেটি বোঝা যায়। শেখ হাসিনা ব্যক্তিগতভাবে খুবই পরিশ্রমী একজন মানুষ। মানসিক শক্তির জোরেই তিনি দিনরাত এক করে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। তথ্য প্রযুক্তি নির্ভর জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা এবং ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের উন্নীত করার লক্ষ্য ২০০৯ সালে শেখ হাসিনার হাত ধরে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অভিযাত্রা শুরু হয়। এই লক্ষ্যে তথ্য প্রযুক্তি অবকাঠামোগত উন্নয়ন, কানেকটিভিটি স্থাপন, ই-গভর্নেন্স প্রতিষ্ঠা, দক্ষ মানব সম্পদ তৈরি, মোবাইল অ্যাপস উন্নয়ন এবং ই-কমার্স প্রসারসহ নানান প্রকল্প বাস্তবায়ন তারুণ্যের কৌতূহলকে জয় করেছে। এককথায় বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তার শাসনামলে দেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠিত করে তারুণ্যকে আকাশ ছোঁয়া বাস্তবভিত্তিক স্বপ্ন দেখিয়ে তাদের হৃদয় জয় করেছেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৭৫তম জন্মদিন আজ

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক গাজী সারওয়ার হোসেন বাবু বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য তারুণ্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে ইতোমধ্যে সফল হয়েছেন। বেকারত্ব দূর করে তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টির মধ্যদিয়ে তরুণদের অনুপ্রেরক হয়ে দাঁড়িয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তরুণ প্রজন্মের হাত ধরে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের মহাসড়কে। ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অগ্রগতি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি ও মানব উন্নয়ন সূচকের ক্রম অগ্রগতি, গড় আয়ু বৃদ্ধি বাংলাদেশকে নতুন রূপে পরিচিতি দিয়েছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা আজ বাস্তবে রূপান্তরিত হচ্ছে। এ সব অর্জনে তরুণদের ভূমিকা অপরিসীম। আর এ তারুণ্যের অনুপ্রেরণার নাম শেখ হাসিনা।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা শুধু নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টির মধ্যদিয়ে তরুণদের বেকারত্বের অবসান ঘটাননি, পাশাপাশি তার সৃষ্টিশীল মেধা তরুণদের অল্প পুঁজি থেকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে উৎসাহিত করছে। একটি দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবার জন্য অন্যতম প্রধান শক্তি হচ্ছে তরুণ সমাজ। শেখ হাসিনা হচ্ছে বাংলাদেশের উন্নয়নের অগ্রদূত। কারণ তিনি তার সৃষ্টিশীল মেধাকে কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশকে তরুণ্যনির্ভর দেশে রূপান্তরিত করেছেন।

 

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ইব্রাহীম হোসেন বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ আজ ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হয়েছে। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশের সবচেয়ে সুবিধাভোগী অংশ তরুণ সমাজ। আজকে বাংলাদেশের তরুণ সমাজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞ। ৮০ দশকে বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য ছিল। আজ প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার বদৌলতে বাংলাদেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সন্ত্রাসমুক্ত। আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পর্যাপ্ত ডিজিটাল শিক্ষা উপকরণ ও ক্রিয়া সামগ্রী বিতরণ করা হচ্ছে। ফলে শিক্ষার্থীরা জ্ঞান চর্চায় ও খেলাধুলায় বিকশিত হচ্ছে। সমাজ থেকে মাদক নির্মূল হচ্ছে, গড়ে উঠছে মাদকমুক্ত তরুণ সমাজ।