বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেছেন, জেলা পর্যায়ে সচিবদের দায়িত্ব দেওয়া প্রধানমন্ত্রীর নিরপেক্ষ চিন্তা এবং একান্ত সিদ্ধান্ত। প্রবীণ নেতাদের বাদ দিয়ে উদীয়মান নেতাদের হাতে উন্নয়নের দায়িত্ব হস্তান্তর করলে সিনিয়ররা সেখানে তার কমান্ড মানতেন না। যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ও দেশের উন্নয়নে একটা বাধা সৃষ্টি হতো। তাই তিনি দলের নেতাদেরকে দায়িত্ব না দিয়ে আমলাদেরকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক কার্যক্রমের নানা বিষয়ে দৈনিক ইত্তেফাকের সাথে একান্ত আলাপকালে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা আজম বলেছেন, করোনা মহামারিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বন্ধ হয়ে যাওয়া সাংগঠনিক কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে সংগঠনের মূল ভিত্তি দাঁড় করানোর চেষ্টা করছি। ২০১৯ এর কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পূর্বে বিশেষ করে ঢাকা জেলার আওতাধীন যে জেলাগুলোতে সম্মেলন হয়নি তা সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে দলকে শক্তিশালী করতে সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছি।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, ঢাকা বিভাগের আওতায় মোট ১৭টি সাংগঠনিক জেলা রয়েছে। এর মধ্যে ১৫ টি জেলার সম্মেলন ছাড়াই ২০১৯ এর কেন্দ্রীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া বাকি দুটি, ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণের সম্মেলন সম্পন্ন হয়েছিলো কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পূর্বে।
অসম্পন্ন জেলার সম্মেলনের বিষয় জানতে চাইলে দৈনিক ইত্তেফাককে মির্জা আজম বলেন, আমাদের একটি সাংগঠনিক পরিকল্পনা রয়েছে তা বাস্তবায়নের পথে আমারা এগিয়ে যাচ্ছি। আমার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হলে সংগঠনের মূল ভিত্তি অল্প সময়ের মধ্যে দাড়িয়ে যাবে বলে আমি আশা করছি।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, তৃণমূলের ওয়ার্ড, ইউনিয়ন, থানা পর্যায়ের সম্মেলনের পর জেলা সম্মেলন প্রক্রিয়ায় হাটার কথা থাকলেও তা সম্পূর্ণ প্রস্তুত না থাকায় কেন্দ্রীয় সম্মেলনের পূর্বে এসব জেলার সম্মেলন করা সম্ভব হয়নি। ঢাকা বিভাগের আওতায় জেলা গুলো ছাড়াও দেশের বিভিন্ন বিভাগের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রায় প্রতিটি জেলায় সম্মেলন সম্পন্ন করেছিলো।
দৈনিক ইত্তেফাকের করা এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম বলেন, জানুয়ারিতে দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার জন্য নানান উদ্যোগ গ্রহণ করি। ফলশ্রুতিতে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া এবং কোটালিপাড়ার দুটি সম্মেলন সম্পন্ন করেছি। এর মাঝেই দেশে করোনার প্রকোপ বেড়ে যাওয়াই সংগঠনের কার্যক্রম সম্পূর্ণ স্থগিত হয়ে যায়।
স্বাস্থ্যবিধি মেনে সংগঠনের কার্যক্রম এগিয়ে নিতে নানা উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে মির্জা আজম আরও বলেন, করোনার প্রকোপের সাথে সহ-অবস্থান করে সংগঠনের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছি। বর্তমানে প্রতি সপ্তাহে এক একটি জেলাতে এক একটি বর্ধিত সভা করার চেষ্টা করছি। মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি গঠনের অংশ হিসেবে আগামী কিশোরগঞ্জ জেলা, শরিয়তপুর, নারায়ণগঞ্জ জেলা, রাজবাড়ী জেলার বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। এছাড়াও পরিকল্পনা অনুসারে ঢাকা মহানগর উত্তর এবং দক্ষিণে বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং ইতিমধ্যে আমরা উত্তরের ওয়ার্ড এবং দক্ষিণে সদস্য সম্মেলনের অভিযান উদ্বোধন করেছি। আমাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে সংগঠনের মূল ভিত্তি দাঁড়িয়ে যাবে।
ঢাকা মহানগরের সাংগঠনিক পর্যালোচনার বিষয়ে জানতে চাইলে দৈনিক ইত্তেফাককে মির্জা আজম বলেন, মহানগরের আওতাধীন থানা-ওয়ার্ড সহ অন্যান্য কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে পর্যায়ক্রমে সংগঠনকে সুদূর ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো। আগামী জুনের পূর্বেই ঢাকা মহানগরের সকল কমিটি সম্পন্ন করার টার্গেট নিয়ে আমরা সাংগঠনিক কার্যক্রম চালিয়ে নিচ্ছি।