কভিডে চতুর্থ তরঙ্গ আঘাত হেনেছে দক্ষিণ আফ্রিকায়। আর সে দেশেই পাওয়া করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণেই এই চতুর্থ তরঙ্গের আঘাত। আর এই আঘাতে আগের তিন আঘাতের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শিশুরা। অধিক সংখ্যক শিশুরা আক্রান্ত হচ্ছে নতুন এই ভেরিয়েন্টে।
শিশুদের উচ্চহারে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলেছে বিশেষজ্ঞরা। তবে এ নিয়ে আতঙ্কিত না হতে তাদের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়। শনিবার এক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা এ কথা বলেন।
রাজধানী প্রিটোরিয়াসহ মেট্রোপলিটন এলাকা তোয়ানে গত মাসে করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনে আক্রান্ত হয়ে বিপুলসংখ্যক নবজাতক ও শিশু হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। অনেকে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, ওমিক্রন অন্যান্য করোনা ভেরিয়েন্টের তুলনায় ছোট বাচ্চাদের জন্য বেশি ঝুঁকি তৈরি করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা এখনও এ ব্যাপারে স্পষ্ট করে কিছু বলতে পারছেন না।
গাউতেং প্রদেশের (যার মধ্যে তোয়ানে এবং দক্ষিণ আফ্রিকার সবচেয়ে বড় শহর জোহানেসবার্গ রয়েছে) জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ এনতসাকিসি মালুলেকে বলেন. প্রদেশের হাসপাতালে ১৫১১ কভিড পজিটিভ রোগীর মধ্যে ১১৩ জনের বয়স ৯ বছরের কম। যা আগের তরঙ্গগুলোর তুলনায় সংক্রমণের একটি বড় অনুপাত।
তিনি এক সাক্ষাৎকারে রয়টার্সকে বলেন, চিকিৎসকদের রিপোর্টে আমরা সান্ত্বনা পেয়েছি যে বাচ্চাদের হালকা লক্ষণ আছে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ও বিজ্ঞানীরা তদন্ত করছেন, কি কারণে অল্পবয়সীদের ভর্তির হার বেড়েছে।
যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকার কভিড পজিটিভ পরীক্ষাগুলোর মাত্র একটি ছোট শতাংশ জিনোম সিকোয়েন্সিংয়ের জন্য পাঠানো হয়, তাই কর্মকর্তারা এখনও জানেন না যে হাসপাতালে ভর্তি শিশুরা কোন ধরনের ভেরিয়েন্টে সংক্রমিত হয়েছে।
মালুলেকে বলেন, স্বাস্থ্যসেবাকর্মীরা প্রচুর সতর্কতার সঙ্গে কাজ করতে হবে। তারা বরং এক বা দুই দিনের জন্য একটি শিশুকে বাড়ির থেকে হাসপাতালে অনেকটাই বেশি যত্নে রাখবে। তবে আমাদের সত্য প্রমাণের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তিনি বলেন, গাউতেং-এর অনেক কভিড-১৯ রোগী স্বাদ বা গন্ধ হারানোর মতো সহজে শনাক্তযোগ্য লক্ষণের বিপরীতে ‘অনির্দিষ্ট’ ফ্লুর মতো উপসর্গের কথা বলছেন।
তবে তিনি পিতা-মাতা এবং গর্ভবতী নারীদের অনুরোধ করেন, ফ্লুর মতো লক্ষণগুলোকে হালকাভাবে না নেওয়ার এবং প্রয়োজনে পরীক্ষা করার জন্য। তিনি বলেন, আপনারা কম ভীত এবং অধিক সতর্ক হন।
বিজ্ঞানীরা এখনো ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের কারণে অসুস্থতার তীব্রতা কতখানি তা খুঁজে বের করার চেষ্টা করছেন। গত ২৪ নভেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথম শনাক্ত হয় ওমিক্রন। এর মধ্যে ৩০টিরও বেশি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
সূত্র : ইনডিপেনডেন্ট