ভারতের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভায় বিজেপি বিধায়কদের হট্টগোলের সমালোচনা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি বলেছেন, বিজেপির সঙ্গে এর আগেও কাজ করেছি। অটল বিহারী বাজপেয়ী, সুষমা স্বরাজ, রাজনাথ সিংদেরও দেখেছি। কিন্তু এখন বিজেপি খায়, না মাথায় দেয় কেউ জানে না। এই বিজেপির সৌজন্যতা, ভদ্রতা নেই। এই বিজেপি ‘ল্যাজ ছাড়া হনু।’
বিধানসভায় গভর্নর জগদীপ ধনকড়ের জবাবি ভাষণের আলোচনার সময় মমতা বলেন, গভর্নর কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত। অথচ তাকে বলতে দেওয়া হলো না। তারা এখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা এবং কুত্সা রটাচ্ছে।
মমতা তার বক্তব্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ও বিজেপির সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বিজেপির সক্রিয় সদস্য হয়ে কাজ করছে। তার দাবি, যিনি মানবাধিকার কমিশনের দায়িত্বে আছেন, তিনি বিজেপির সক্রিয় সদস্য। নির্বাচন কমিশনেরও সমালোচনা করেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, নির্বাচন কমিশন মদত না দিলে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ৩০টা আসনও পেত না। মোদি-অমিত শাহ-বিজেপি যা বলেছে, কমিশন সেই মতো কাজ করেছে।
তিনি বলেন, পশ্চিমবঙ্গ কারো ধমকানিতে ভয় পায় না। তার অভিযোগ, বিজেপি শাসিত রাজ্যে জঙ্গলের রাজত্ব চলছে। মমতা জানান, বিধানসভা ভোট হয়েছিল আট দফায়, খেলা হবে স্লোগান দিয়ে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। আগামী দিনে গোটা রাজ্যে খেলা হবে, দিবস পালন হবে। কবে তা পালন হবে পরে জানানো হবে বিধানসভায়। খবর আনন্দবাজার পত্রিকা ও এনডিটিভির।
এদিকে বিজেপির আনা মুলতুবি প্রস্তাব খারিজ করায় গতকাল তুমুল হট্টগোল বিধানসভায়। গভর্নরের ভাষণ নিয়ে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বলতে বাধা দেওয়ার অভিযোগে বিধানসভা থেকে ওয়াক আউট করেন বিজেপি বিধায়করা। গতকাল গভর্নরের ভাষণের ওপর জবাবি ভাষণ দেন বিধায়করা। বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় অধিবেশন শুরু করতেই বিরোধী দলের পক্ষ থেকে ভোট-পরবর্তী সহিংসতা নিয়ে মুলতুবি প্রস্তাব আনার কথা বলা হয়। যদিও স্পিকার সেই প্রস্তাব খারিজ করে দেন। গভর্নরের ভাষণের পর এই প্রসঙ্গ নিয়ে আলোচনা হতে পারে বলে জানিয়ে দেন তিনি। এর পরই বিধানসভার ভিতরে বিজেপি বিধায়কদের বিক্ষোভ শুরু হয়।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, কংগ্রেস ও বাম মুক্ত বিধানসভা এই প্রথম। নন্দীগ্রামের জনতাকে ধন্যবাদ। এর পর নন্দীগ্রামে নির্বাচন প্রসঙ্গে শুভেন্দু বক্তব্য রাখলে আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক স্পিকারের কাছে গিয়ে প্রতিবাদ জানান। এর পর বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দুকে বলেন, বিচারাধীন বিষয়ে বলা যাবে না। আপনি অন্য কথা বলুন। স্পিকারের এই বক্তব্যের পরই ভাষণ শেষ করে ওয়াক আউট করেন শুভেন্দুসহ বিরোধী বিধায়করা। ওয়াক আউটের নিন্দা জানান স্পিকার। বিরোধী দলের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবও পাশ হয় বিধানসভায়। এছাড়াও শুভেন্দুর বলা দুটি শব্দ বাদ দেওয়ার নির্দেশ দেন স্পিকার।