তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ায় জার্মানির হেসেন রাজ্যের স্টেটস চেম্বার অব ফার্মাসিস্ট রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা সম্পর্কে মানুষকে সতর্ক করেছে। পাশাপাশি প্রচুর পানি পান করার আহ্বান জানিয়েছে। এ ছাড়া গরমে জগিং বা বাইরে শরীরচর্চা এড়িয়ে যেতে বলেছে। রাজধানী বিসবাডনের স্বাস্থ্য দপ্তর ছোট শিশু ও দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ ব্যক্তিদের রোদের প্রকোপ এড়িয়ে চলতে বলেছে। গ্রীষ্মকালে এ ধরনের সতর্কবার্তা জার্মানির জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।
এদিকে ক্রমাগত খরার মুখে জার্মানির বেশ কিছু বনাঞ্চলে দাবানল দেখা দিয়েছে। এতে রাজধানী বার্লিনের নিকটস্থ পটসডাম-মিটেলমার্ক জেলার ফ্রনসডর্ফে ৬০ হেক্টর বনভূমি পুড়ে গেছে। স্থানীয় ফায়ার ব্রিগেড, পুলিশ ও সশস্ত্র বাহিনীর প্রযুক্তিগত সহায়তায় দাবানল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে।
জার্মানির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের প্রতিবেশী দেশ ফ্রান্সের কিছু অংশে তাপপ্রবাহ সর্বোচ্চ ৪৩ ডিগ্রিতে পৌঁছেছে। ফ্রান্সের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, অতি তাপমাত্রা জীবনযাত্রা ও পরিবেশের জন্য একটি ব্যতিক্রমী পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। সাধারণত বছরের এই সময় তাপমাত্রা ৩৫ থেকে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকে।
ফ্রান্সের প্রতিবেশী দেশ স্পেনে কয়েক দিন ধরে অস্বাভাবিক তাপমাত্রায় সৃষ্ট দাবানলে হাজার হাজার হেক্টর জমির বনভূমি পুড়ে গেছে। স্পেনের ক্যাস্টিল-লা মাঞ্চার অঞ্চলে আগুনের কারণে কয়েক দিন আগে পুই ডু ফোউ বিনোদন পার্ক থেকে ৩ হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। দেশটির উত্তর-পশ্চিমে সিয়েরা দেল কুলেব্রাতে ৭ হাজার হেক্টর বনভূমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। দাবানলের কারণে সতর্কতা হিসেবে ২০০ জনকে সেখান থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হয়।
ইতালির উত্তরাঞ্চলের পো উপত্যকা গত ৭০ বছরের মধ্যে রেকর্ড পরিমাণ শুষ্ক খরায় ভুগছে। এই এলাকার কৃষি আবাদি অঞ্চলে রেশনিং করে পানি বিতরণ করা হচ্ছে। এই এলাকায় অবস্থিত কোল্ডিরেটি অ্যাগ্রিকালচারাল অ্যাসোসিয়েশনের মতে, এ ধরনের খরা পো উপত্যকার আবাদি জমির অর্ধেক ও জাতীয় কৃষি উৎপাদনের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ হুমকির মুখে পড়েছে।
এ ছাড়া নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম ও যুক্তরাজ্যের কিছু কিছু জায়গায় তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে। জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের মতে, ইউরোপজুড়ে এই তাপপ্রবাহ, খরা ও বনভূমির দাবানল বৃদ্ধি বৈশ্বিক উষ্ণতার প্রত্যক্ষ ফল।