আরেকটি স্বপ্ন উদ্বোধনের অপেক্ষায় বাংলাদেশ

পদ্মা বহুমুখী সেতুর ল্যাম্পপোস্টের আলো যে দ্যুতি ছড়িয়েছে, তা বাংলাদেশের অগ্রগতি ও অগ্রযাত্রার নিদর্শন। সেতুটি উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে দেশের ১৭ কোটি মানুষের স্বপ্নকে বাস্তবে রূপ দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বমঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নতুন মাত্রায়। তেমনই বাংলাদেশের সক্ষমতার আরেক নিদর্শন বা প্রতীক হিসেবে স্থাপিত হচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ায় কর্ণফুলী নদীর তলদেশে প্রথম নির্মিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেল’।

পদ্মা সেতু উদ্বোধনের পর চট্টগ্রাম তথা দেশবাসীর কাছে এখন আরেক আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে কর্ণফুলীর বঙ্গবন্ধু টানেল। প্রহর গুনছে স্বপ্নের টানেল পাড়ি দেওয়ার। উদ্বোধনের অপেক্ষার এই প্রহরের উচ্ছ্বাস-আনন্দের বার্তা ঘুরে বেড়াচ্ছে এখন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও। সবকিছু নিয়মমাফিক এগোলো আগামী ডিসেম্বরে দক্ষিণ এশিয়ায় নদীর তলদেশে প্রথম টানেলের যুগে প্রবেশ করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। দেশের ১৭ কোটি মানুষের মর্যাদার প্রতীক এই টানেল উদ্বোধন করবেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রকল্পের অবশিষ্ট ১৪ শতাংশ কাজ শেষ হলেই বিশ্বের বুকে বাংলাদেশ আরেক নতুন ইতিহাসের সাক্ষী হবে। এই টানেল দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। চট্টগ্রামসহ দক্ষিণাঞ্চলের অর্থনীতির চাকা ঘুরে যাবে দ্রুত বেগে। বাড়বে জীবনযাত্রার মান ও কর্মসংস্থান। কর্ণফুলী নদীর আনোয়ারা অংশে অর্থাৎ দক্ষিণ চট্টগ্রামে নতুন নতুন শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠবে। কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণে আসবে বিদেশি বিনিয়োগ।

প্রকল্প কর্মকর্তারা জানান, কর্ণফুলীর অপর প্রান্তে সিইউএফএল এলাকায় টানেলের মুখ থেকে শুরু হয়ে কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত গিয়ে পিএবি সড়কের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে টানেল রোড। অন্যদিকে শিকলবাহা ওয়াই জংশন থেকে সাড়ে ১১ কিলোমিটার ছয় লেনের সড়ক তৈরি করা হচ্ছে। এটিও কালাবিবির দীঘি পর্যন্ত গিয়ে যুক্ত হবে টানেল রোডের সঙ্গে।

প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী হারুনুর রশিদ আরটিভি নিউজকে বলেন, গত মে মাস পর্যন্ত প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮৬ শতাংশ শেষ হয়েছে। টানেলের দুটি টিউবের খনন কাজ আগেই শেষ হয়েছে। এখন টানেলের ভেতরে ইন্টারনাল স্ট্রাকচারের কাজ চলছে। দুই টিউবের ক্রস প্যাসেজের কাজ চলছে। উচ্চমাত্রার ঝড়-জলোচ্ছ্বাসের কথা চিন্তা করেই টানেলের ডিজাইন করা হয়েছে। টানেলের মুখে ফ্লাডগেটসহ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে ডিজাইন অনুযায়ী। সুতরাং জলোচ্ছ্বাস হলেও টানেলের কোন ক্ষতি সাধন হবে না।

image_pdfimage_print