হামিদুল হক মেম্বারের ত্রাসের রাজত্ব

আনোয়ার হোসেন :

‘জমি আছে-ঘর নাই’ এমন গৃহহীন হতদরিদ্র পরিবারকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নামে লাখ-লাখ টাকা আত্মসাৎ করাসহ বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েমের অভিযোগ পাওয়া গেছে হামিদুল হক মেম্বারের বিরুদ্ধে।

মো. হামিদুল হক

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড (পাঁচপাড়া) এর মেম্বার মো. হামিদুল হক শতাধিক হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে ঘর নির্মাণ করে দেওয়ার নামে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা করে আদায় কারার অভিযোগ করেছে ভুক্তভোগী পরিবার। ত্রাণ ও পূনর্বাসন মন্ত্রনালয়ের মাধ্যমে হতদরিদ্রের বাসস্থান নির্মাণ করে দিচ্ছে বর্তমান সরকার। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে লাখ-লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় হামিদুল হক মেম্বার।

অনুসন্ধানে জানা যায়, গত এক বছর ধরে ৭ থেকে ১০ হাজার টাকা করে শতাধিক পরিবারের কাছ থেকে হাতিয়ে নেয় মোটা অঙ্কের টাকা। এ বিষয়ে পাঁচপাড়া গ্রামের সিরাজ মিয়ার ছেলে মহিন উদ্দিন, সোহাগের স্ত্রী বিলকিছ বেগম, রুস্তম আলীর ছেলে নূর আলম, নজরুল ইসলামের স্ত্রী শিউলি বেগম, মৃত নবী উল্যার ছেলে রিয়াদ হোসেন, সুলতান আলীর ছেলে আব্দুল কুদ্দছ, আতর আলীর স্ত্রী রোকেয়া বেগম ও মৃত শাহনাজ বেগমের ছেলে জালাল উদ্দিনসহ অনেকে প্রদীপ্ত’কে টাকা দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি বলেন, গৃহনির্মাণের নামে টাকা তুলে ওই টাকা দিয়েই হামিদ মেম্বার তার নিজের টিনসেট ঘরটি পাকা ভবনে উন্নীত করেন। এছাড়াও বয়স্ক ভাতা এবং বিধবা ভাতার কার্ডধারীদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নেন মেম্বার হামিদুল হক।

এদিকে ইয়াসিন আরাফাত (আরিফ) অভিযোগ করেন, তাঁর কাছে মেম্বার বিভিন্নভাবে চাঁদা দাবি করেন। তিনি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় তাকে প্রাণহাণির হুমকি দেওয়া হয়। হামিদুল হক মেম্বারের স্বেচ্ছাচারিতায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। কিন্তু তাঁর সন্ত্রাসী শক্তি আছে বলে ভয়ে কেউ মুখ খুলতে রাজি নয়। গত ২৫ নভেম্বর প্রদীপ্ত’র কাছে যারা তার বিরুদ্ধে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন; তাদেরকে হামিদ মেম্বার ও তার লোকজন ভয়-ভীতি ও ধমক দেওয়া দিচ্ছে বলে জানা যায়। হামিদুল হক মেম্বারের ত্রাসের রাজত্ব থেকে মুক্তি পেতে একালাবাসী প্রশাসনের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।

বিষয়টি নিয়ে হামিদুল হকের সাথে প্রদীপ্ত’র অনুসন্ধানী টিমের সদস্যা কথা বললে তিনি জানান, তার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয় তা মিথ্যা তিনি এই বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। এসময় (হামিদুল হক কথা বলার মাঝে) মহিন উদ্দিনে স্ত্রী প্রদীপ্ত’র অনুসন্ধানী টিমের সামনে ঘর চেয়ে বসেন। তিনি বলেন, ‘গত কোরবানের ঈদে আপনি টাকা নিছেন ঘর দিবেন বলে কিন্তু ঘর দেন নাই কেন ?’ হামিদুল হক মহিন উদ্দিনে স্ত্রীকে বলেন, ‘তার স্বামীর কাছ থেকে (হামিদুল হক) টাকা ঋণ নিয়েছে’।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ১০নং চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম বাবুল প্রদীপ্তকে জানান, ‘হামিদুল হক মেম্বার এর বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগের এই বিষয়টি ইউনিয়ন পরিষদের স্বমন্বয় সভায় উত্থাপন করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’।