আড়াইহাজারে এক গৃহবধূকে রাস্তা থেকে তুলে মাঝনদীতে নিয়ে সাবেক স্বামী ও তার সহযোগীরা দলবদ্ধ ধর্ষণ করেছে। স্ত্রীকে উদ্ধার করতে তাঁর স্বামী ঘটনাস্থলে গেলে তাঁকে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ধর্ষকরা। এ ঘটনায় ওই নারীর স্বামী বৃহস্পতিবার পাঁচজনের নাম উল্লেখ করে আড়াইহাজার থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই গৃহবধূর বাড়ি উপজেলার কালাপাহাড়িয়া এলাকায়। পাঁচ বছর আগে রাধানগর গ্রামের শেখ ফরিদের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের আগে মেয়েটির পরিবার জানত না ফরিদ মাদকসেবী। বিয়ের পর থেকে ফরিদ মাদকের টাকার জন্য স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর করত। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে অনেকবার সালিশ হয়। একপর্যায়ে বিয়ের এক বছরের মাথায় কাজি ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তির উপস্থিতিতে ফরিদকে তালাক দিয়ে মেয়েটি বাবার বাড়িতে চলে আসেন। পরের বছর পারিবারিকভাবে কালাপাহাড়িয়া এলাকার আরেক যুবকের সঙ্গে মেয়েটির ফের বিয়ে হয়। কিন্তু এর পরও ফরিদ সাবেক স্ত্রীর ফোন নম্বর জোগাড় করে প্রায়ই তাঁকে নানাভাবে উত্ত্যক্ত করত এবং হুমকি দিত। গত রোববার সন্ধ্যায় রাধানগর বাজরে ওষুধ কিনতে গেলে ফরিদ ও সহযোগী স্থানীয় মো. হালিম, মো. মজিবুর, সোহেল মিয়া ও আ. কাদির রাস্তা থেকে ওই গৃহবধূকে জোরপূর্বক তুলে নিয়ে যায়। তারা ওই গৃহবধূকে মেঘনা ঘাট হয়ে ইঞ্জিন নৌকা করে মাঝনদীতে নিয়ে দলবদ্ধ ধর্ষণ করে নতুনবাজার নামক এলাকায় নামিয়ে দেয়। গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সেখান থেকে ওই নারী তাঁর স্বামীকে ফোন করে ঘটনা জানান। স্ত্রীর খোঁজে রাতেই তাঁর স্বামী নদীর ঘাট এলাকায় গেলে ধর্ষণকারীরা দেখতে পেয়ে তাঁকেও জোর করে মাঝনদীতে নিয়ে রড দিয়ে পিটিয়ে আহত করে ট্রলারে ফেলে রেখে চলে যায়। পরে আহত অবস্থাতেই সেখান থেকে নতুনবাজার এসে স্ত্রীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন তিনি।
এদিকে, বাড়িতে ফিরলেও কালাপাহাড়িয়া এলাকার কিছু প্রভাবশালী ধর্ষণের বিষয়টি মীমাংসা এবং ফরিদের বিরুদ্ধে মামলা না করতে ওই গৃহবধূ ও তাঁর স্বামীকে চাপ দেয় বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই গৃহবধূর স্বামী জানান, গতকাল হাসপাতালে যাওয়ার কথা বলে কৌশলে তিনি স্ত্রীকে নিয়ে আড়াইহাজার থানায় গিয়ে মামলা করেন।
আড়াইহাজার থানার ওসি ইমদাদুল ইসলাম তৈয়ব জানান, মামলা নেওয়া হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযানে নেমেছে। ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য গৃহবধূকে নারায়ণগঞ্জের হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।