নিজস্ব প্রতিবেদক
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ হারুন অর রশিদ চৌধুরীকে প্রত্যাহার করে চট্টগ্রাম রেঞ্জের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) দপ্তরে সংযুক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম রেঞ্জ ডিআইজি দপ্তর থেকে মঙ্গলবার দুপুরে এই আদেশ দেওয়া হয়।
উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে এক নারীকে (৩৭) বিবস্ত্র করে নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র ৪ অক্টোবর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। গত সেপ্টেম্বর মাসের শুরুর দিকে নির্যাতনের ওই ঘটনা সামনে এলে দেশব্যাপী সমালোচনার ঝড় ওঠে।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আলমগীর হোসেন মঙ্গলবার দুপুরে ওসিকে প্রত্যাহারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তবে ঠিক কী কারণে ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে, তা ব্যাখ্যা করতে রাজি হননি এসপি। তিনি বলেন, ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরীকে থানা থেকে প্রত্যাহার করে রেঞ্জ কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছে। চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজি মঙ্গলবার দুপুরে নিজেই এই আদেশ দিয়েছেন।
ঘটনা তদন্তে প্রশাসনের দুই কমিটি
এদিকে আলোচিত ওই নারী নির্যাতনের ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে গঠিত পৃথক দুটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) খালেদ ইবনে মালেককে আহ্বায়ক করে পুলিশ প্রশাসনের গঠিত তিন সদস্যের ওই কমিটি তদন্তের জন্য মঙ্গলবার বেগমগঞ্জ থানা পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তাঁরা থানার বিদায়ী ওসি হারুন অর রশিদ চৌধুরীসহ বিভিন্ন পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন। গতকাল সোমবার গঠিত এই কমিটির অপর দুই সদস্য হলেন জেলার হাতিয়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার গোলাম ফারুক ও পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের পরিদর্শক (ক্রাইম) এইচ এম সামছুদ্দিন।
তদন্তের বিষয়ে জানতে চাইলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কমিটির এক সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, সারা দেশে আলোচিত ওই ঘটনায় স্থানীয়ভাবে থানা–পুলিশের কোনো দায়িত্বে অবহেলা ছিল কি না, মূলত সেটি খতিয়ে দেখতেই জেলা পুলিশের এই তদন্ত চলছে।
এদিকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান মঙ্গলবার বিকেলে বলেন, ঘটনার পরই জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ইসরাত সাদমীনকে প্রধান করে তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। কমিটিতে বেগমগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সদস্য হিসেবে আছেন।
জেলা প্রশাসক বলেন, ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পরদিন এই কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কমিটিকে ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কেন ঘটনাটি ঘটল, ঘটনার পর তা জনপ্রতিনিধি বা স্থানীয় মানুষজন কেন প্রশাসনকে অবহিত করেনি, তা খতিয়ে দেখছে তদন্ত কমিটি।