১৭ মাস বন্ধ থাকার পর অবশেষে দ্বার খুলতে যাচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের। শিক্ষার্থীদের মধ্যে উৎসবের আমেজ। দীর্ঘদিন পর স্কুলে যাবে। ঘরে বন্দি থেকে একপ্রকার মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে আছে। ফলে শিক্ষার্থীদের আগ্রহের যেন শেষ নেই।
যে সব শিক্ষার্থী গত বছর জানুয়ারিতে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল তারা দুই মাস স্কুলে গেলেও এখন দ্বিতীয় শ্রেণিও শেষ করতে যাচ্ছে। স্কুলের পরিবেশ, বন্ধুবান্ধব থেকে পুরো সময়টাই বঞ্চিত ছিল তারা। নিজ ঘরে কেটেছে পুরো সময়।
প্রায় দেড় বছর ঘরে বসে থাকা ও না পড়া এসব শিক্ষার্থী যাতে স্কুলে গিয়ে পড়ার চাপে না পড়ে সে বিষয়ে দৃষ্টি দিয়েছে শিক্ষা বিভাগ। এ কারণে খোলার দুই মাসের মধ্যে কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিক পরীক্ষা ও মূল্যায়ন না করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার গাইডলাইনে বলা হয়েছে, ক্লাসের শুরুতে শ্রেণিশিক্ষক পাঁচ মিনিট মোটিভেশনাল ব্রিফিং দিবেন। যেখানে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধি, শারীরিক দূরত্বের বিধি, হাত ধোয়ার সঠিক নিয়ম, মাস্ক পরার নিয়ম, হাঁচি-কাশির শিষ্টাচার, কফ ও থুথু ফেলার শিষ্টাচার ইত্যাদি বিষয়ে বলবেন।
শিক্ষার্থীদের স্কুলে আসার জন্য উত্সাহী করতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম কয়েকদিন (একাধিক শিফটে/একাধিক দিনে বিভিন্ন শ্রেণির শিক্ষার্থীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আনা হলে) স্বাস্থ্যবিধি মেনে শিক্ষার্থীদের বিশেষভাবে স্বাগত জানানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়।
১২ সেপ্টেম্বর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার পর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা খুবই কম সময় পাবে। শুরুতে প্রথমে চার ঘণ্টা করে ক্লাস হবে। পর্যায়ক্রমে এটি বাড়বে। এছাড়া প্রথমে অন্যান্য শ্রেণির সপ্তাহে এক দিন ক্লাস হবে। ফলে সিলেবাস কোনোভাবেই শেষ করা যাবে না। এছাড়া এসএসসি ও এইচএসসি বাদে অন্য কারো সংক্ষিপ্ত সিলেবাসও করা হয়নি।
অধ্যাপক মো. মশিউজ্জামান জানান, চলতি বছরের মার্চে স্কুল খোলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। ঐ সময়ে গত বছরের সিলেবাস নিয়ে একটি রেমিডিয়াল প্যাকেজ তৈরি করেছিল এনসিটিবি। কিন্তু করোনা সংক্রমণ বাড়ার কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা যায়নি।
শিক্ষাক্রম নিয়ে গবেষণা করা এই শিক্ষক আরও বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষের যে সময় আছে তাতে এই প্যাকেজ শেষ করা সম্ভব নয়। এ কারণে চলতি শিক্ষাবর্ষ আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাস পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যেতে পারে। পৃথিবীর অনেক দেশে এমন উদাহরণ আছে বলে জানান তিনি।