সারা বছরই পানি সংকট। যেটুকু মেলে তাও পান করার যোগ্য নয়। ময়লা আর দুর্গন্ধ পানি ফুটিয়ে পান করলেও মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে ডায়রিয়ায়। এমন ভোগান্তি রাজধানীর উত্তর সিটি করপোরেশনের ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কয়েক লাখ বাসিন্দার।
পানিতে ময়লার কথা স্বীকার করে ওয়াসা বলছে, চোরাই পথে পানির সংযোগ নেওয়ায় ঘটেছে এমন ঘটনা। তবে নতুন পাইপলাইন ও পাম্প বাসানোর কাজ শেষ হলে থাকবে না সংকট।
ওয়াসার পানি। পান করার জন্য সংগ্রহ করা পানিতে দানা পাকিয়েছে হলুদ ময়লা, যা কয়েক ঘণ্টা ফোটানোর পরও কোনো পরিবর্তন হয় না। এ অবস্থা উত্তরার তুরাগতীরের কামারপাড়ার।
গত কয়েক বছরের তীব্র পানি সংকটে এলাকার প্রতিটা বাসায় পানি সংগ্রহে রাখতে ব্যাপক আয়োজন।
এলাকার এমন কোনো ঘর নেই যেখানে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত রোগী নেই। অধিকাংশ স্থানে সুয়ারেজ লাইনের ময়লার পানির মধ্যদিয়েই পানির সংযোগ লাইন।
স্থানীয়রা বলছেন, প্রতি মাসে ওয়াসার বিল পরিশোধ করলেও সুপেয় পানি মেলে না কখনোই।
ভুক্তভোগীরা বলেন, গত দেড় মাস ধরে টয়লেটের পানি আসছে, ছেকে ও ফুটিয়ে পানি পান করা হচ্ছে, পানি ছাড়া মানুষের জীবন তো বাঁচে না। তাই বাধ্য এ পানি পান করছি আমরা।
তারা বলেন, মাসিক বিল তো আমরা দিচ্ছি, যে পানিটা আমরা পাচ্ছি সেটা দিয়ে কোনো কিছু করা সম্ভব না।
আরেকজন বলেন, বমি, পাতলা পায়খানা নিয়ে আমাদের এখানকার বেশির ভাগ মানুষ মহাখালীর কলেরা হাসপাতালে ভর্তি আছেন। কয়েকদিন আগে একজনের বমি- ডায়রিয়া হওয়ার পর স্টোক করে হাসপাতালে নিতে নিতেই সে মারা যান।
ওয়াসা বলছে, সংকট নিরসনে এলাকায় বসানো হচ্ছে নতুন পাইপলাইনের পাশাপাশি চারটি নতুন পাম্প।
ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তাসকিম এ খান বলেন, এই এলাকা ওয়াসার বাইরে, আমাদের শেষ সীমানা। অনেকেই বেআইনিভাবে লাইন নিয়েছে, যা ভাঙাচোরা বা নিম্নমানের পাইপ দিয়ে। পরবর্তীতে লাইন বিচ্ছিন না করে তাদের বৈধ করে দিয়েছি। কিন্তু পাইপগুলো পুরাতন ও ভাঙাচোরা হওয়ায় ওয়াসার পানির সঙ্গে ময়লা ঢুকে পানি নষ্ট করছে। তবে ওয়াসার পানি খারাপ যাচ্ছে না। এডিবির অর্থায়নে কাজ শুরু হয়েছে, পুরাতন চোরাই পাইপ ফেলে দিয়ে নতুন পাইপ বসবে, তখন গ্রাহকও বৈধ হবে, এরপর থেকে আর খারাপ পানি থাকেবে না। তাদের সমস্যা দূরীভূত হবে।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতায় ৫৪ নম্বর ওয়ার্ডের কামারপাড়া, খায়েরটেক, কালিয়ারটেকসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় পানি নিয়ে চরম এ দুর্ভোগ দীর্ঘদিনের।