নির্যাতনের বীভৎস বর্ণনা ভারত ফেরত ‘টিকটক’ তরুণীর

ভারতে নারী পাচার ও যৌনকর্মে বাধ্য করার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার পাচারকারী চক্রের মূল হোতা আশরাফুল ইসলাম রাফিসহ চারজনের পাঁচ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার (২ জুন) বিকেলে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম ইয়াসমিন আরা রিমান্ডের এ আদেশ দেন। রাফি ছাড়া বাকি আসামিরা হলেন- আব্দুর রহমান শেখ, ইসমাইল সরদার ও মোছা. সাহিদা বেগম।রাজধানীর হাতিরঝিল থানার দায়ের করা মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন ফারুক আসামিদের আদালতে হাজির করে প্রত্যেকের ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক তাদের ৫ দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

ভারতে নারীপাচার এবং সম্প্রতি বাংলাদেশি তরুণীকে পৈশাচিক নির্যাতনের ঘটনায় আন্তর্জাতিক নারীপাচার চক্রের অন্যতম মূল হোতা আশরাফুল মণ্ডল ওরফে বস রাফি ও তার সহযোগী ম্যাডাম সাহিদাসহ চার সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব।

 

সোমবার (৩১ মে) থেকে মঙ্গলবার (১ জুন) সকাল পর্যন্ত র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা ও র‌্যাব-৩ এর অভিযানে ঝিনাইদহ সদর, যশোরের অভয়নগর ও বেনাপোল হতে নারী পাচার চক্রের চারজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা পাচার চক্রের সঙ্গে জড়িত বলে স্বীকারোক্তি দিয়েছে বলে জানায় র‌্যাব।

 

রাজধানীর টঙ্গীতে একটি ফাইভ স্টার আদলে এক হোটেলে প্রতি সপ্তাহে টিকটক গ্রুপের পুল পার্টির আয়োজন হয়। এই পুল পার্টিতে উঠতি বয়সের তরুণীরা অংশ নেয়। তারা টিকটক ভিডিও প্রদর্শন করার পর যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের মধ্য থেকে পাচারের জন্য বাছাই করা হত। টিকটক মডেল করার লোভ দেখিয়ে পুল পার্টি থেকে কয়েকশ’ তরুণীকে পাচার করা হয়েছে প্রতিবেশী ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে। এই চক্রের মাধ্যমে এ পর্যন্ত পাঁচ শতাধিক তরুণীকে ভারত ও মধ্যপ্রাচ্যে পাচার করা হয়েছে।

 

র‌্যাব জানায়, বেঙ্গালুরুতে বাংলাদেশের এক তরুণীকে বিবস্ত্র করে পৈশাচিক কায়দায় নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। উক্ত ঘটনার প্রেক্ষিতে ভারতের বেঙ্গালুরু পুলিশ রিফাজুল ইসলাম বাবু ওরফে টিকটক হৃদয় বাবু, সাগর, মোহাম্মদ বাবা শেখ, হাকিল ও দুই নারীসহ মোট ৬জনকে গ্রেপ্তার করে। এ ঘটনায় ২৭শে মে রাতে তরুণীর বাবা হাতিরঝিল থানায় মানব পাচার আইন ও পর্নোগ্রাফি অ্যাক্টে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় টিকটিক বাবুসহ আরও চারজনকে আসামি করা হয়। এ ঘটনার সূত্র ধরেই আশরাফুল মণ্ডল ওরফে বস রাফি ও তার সহযোগী ম্যাডাম সাহিদা (৪৬), মো. ইসমাইল সরদার (৩৮) ও মো. আব্দুর রহমান শেখকে (২৬) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সোমবার ঝিনাইদহ সদর, যশোরের অভয়নগর, ও বেনাপোল হতে তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।