বাংলাদেশ থেকে আকাশছোঁয়ার স্বপ্ন এবার সত্যি হতে চলছে ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের স্বপ্নবাজ ২০ শিক্ষার্থীর হাত ধরে। টানা ৫ বছর গবেষণা করে বাংলাদেশে এই প্রথম রকেট উৎক্ষেপণ করতে যাচ্ছে তড়িৎ ও ইলেকট্রনিকস ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এই গবেষক দলটি।
গবেষণার চূড়ান্ত ধাপ শেষ করে “ধূমকেতু” নামে ৪টি রকেট তৈরির পর রকেট উৎক্ষেপণে এখন শুধু অনুমোদনের অপেক্ষা। গবেষক দলটি জানায়, প্রাথমিকভাবে আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করা গেলেও পরবর্তীতে স্যাটেলাইটসহ মহাকাশ গবেষণায় কাজে লাগানো যাবে এই রকেট। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে দেশে গবেষণার নতুন দ্বার উন্মোচন সম্ভব বলে মনে করে গবেষক দলটি।
ধূমকেতু। মহাজাগতিক বস্তুর নামে তৈরি করা এই রকেট টানা ৫ বছরের অক্লান্ত পরিশ্রম আর গবেষণার ফসল। ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী নাহিয়ান আল রহমানের উদ্যোগে ২০ জনের আলফা সায়েন্স ল্যাব টিম চূড়ান্ত গবেষণা শেষে তৈরি করেছে ১০০ কেজি ওজনের ৪টি রকেট। প্রাথমিকভাবে ৫০ কিলোমিটার উচ্চতায় উঠে আবহাওয়ার তথ্য নিতে সক্ষম এই রকেট।
ধূমকেতু রকেট টিমের প্রধান নাহিয়ান জানান, কোন ধরনের পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই নিজস্ব গবেষণায় রকেট আবিষ্কার করতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়েছে তাকে। ফাউন্ডার অ্যান্ড টিম লিডার নাহিয়ান আল রহমান বলেন, আমরা অনেক চড়াই-উতরাই পার করে এই অবস্থায় পৌঁছেছি।
দেশে রকেট সায়েন্স নিয়ে কোনো বিভাগ না থাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে দেশের বাইরে থেকে গবেষণার তথ্য ও পাঠ্য উপকরণ সংগ্রহ দুরূহ ব্যাপার বলে জানান গবেষক দলের সদস্যরা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে মহাকাশ গবেষণার পাশাপাশি দেশের মাটিতেই নতুন নতুন উদ্ভাবনী সম্ভব বলে মনে করেন তারা।
গবেষক দলের ৩ সদস্য বলেন, আমাদের সাপোর্টের ঘাটতি ছিল। পৃষ্ঠপোষকতা পেলে শুধু রকেট সায়েন্স না যে কোনো গবেষণায় বাংলাদেশে সফলভাবে সম্পন্ন করা সম্ভব। এখন আমরা বিষয়টি নিয়ে আন্তর্জাতিক জার্নালে গবেষণাপত্র প্রকাশ করার চিন্তাভাবনা করছি।
তথ্যপ্রযুক্তি ও গবেষণার উন্নয়নে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার আশ্বাস ময়মনসিংহ সিটি মেয়রের। এ বিষয়ে সরকারের উচ্চপর্যায় থেকেও সুদৃষ্টি আশা করেন তিনি। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের মেয়র ইকরামুল হক টিটু বলেন, স্থানীয় পর্যায় থেকে সব ধরনের সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি কিন্তু এটিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সহযোগিতা প্রয়োজন।
২০৩৫ সালের মধ্যে নিজস্ব প্রযুক্তিতে মহাকাশে মানুষ পাঠানোর লক্ষ্য ময়মনসিংহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের আলফা সায়েন্স ল্যাবের। এ ছাড়া ইলেকট্রিক বাইক ও বিমান তৈরিতে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে এই গবেষক দলটি।