ব্যক্তি, সমাজ থেকে রাষ্ট্রে অজানা কোন কারনে অপরাধ এবং অপরাধীর সংখ্যা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ এমনটি চলতে থাকলে আগামী প্রজন্ম এবং দেশের উন্নয়নের জন্যে বড় হুমকির আশঙ্কা করা যায়৷ অপরাধীর লাগাম টেনে ধরতে পারলে অপরাধ নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব৷
যারা পড়াশোনা করেছেন অথবা যারা পড়াশোনা করেন নাই সবাই (বাংলা দ্বিতীয় পত্রের ভাবসম্প্রসারণ) ‘পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা করো’ কথাটি সম্পর্কে জানেন৷ দেশে বর্তমান সময়ে অপরাধীদের সংখ্যা বিবেচনা করলে নিশ্চয়ই শিক্ষিত অপরাধীর সংখ্যা বেশি হবে৷ প্রশ্ন হচ্ছে, ভাবসম্প্রসারণটি কতজন অপরাধী মেনে চলছেন ? আমার মতে সকল অপরাধী সম্পূর্ণ রূপে ভাবসম্প্রসারণ এর মর্মার্থ পালন করছেন৷ কেননা তাঁরা জানেন, আমাদের শেখানো হয়েছে – ‘পাপীকে নয়, পাপকে ঘৃণা করো’৷
ভাবসম্প্রসারণটির মাধ্যমে পাপীকে (অপরাধীকে) ঘৃণা না করতে শেখানো হচ্ছে, আর পাপকে ঘৃণা করতে৷ এখানে একটি প্রশ্ন করে রাখি, দেশের আইন কাকে সাজা দেয়? পাপকে না পাপীকে? ধর্মীয় জ্ঞান কি বলে, অপরাধীকে জাহান্নামে (নরক) দিবে না অপরাধকে? পাঠ্যবইয়ের পাতায় যে ভাবসম্প্রসারণটি শেখানো হয়েছে, যুগ যুগ ধরে তা নিশ্চয়ই সময়োপযোগী ছিলনা৷
সময় এসেছে, পাপীকে ঘৃণা করার৷ সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে- ধর্ষণ, খুন, গুম, হত্যা, নারী নির্যাতন, ঘুষ-দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, অর্থপাচারসহ বিভিন্ন অপরাধের মহামারীতে সোনার বাংলা৷ যেহেতু আমরা ভাবসম্প্রসারণ থেকে শিখেছি, পাপীকে ঘৃণা না করতে; তাই পাপীর (অপরাধী) পক্ষে ক্ষমতা, সম্পর্ক অথবা অর্থের বিনিময়ে নির্লজ্জের মতো সামাজিক কিছু জীবকে দাঁড়াতে দেখা যায়৷
আসুন এখন থেকে পাপকে এবং পাপীকে ঘৃণা করতে শুরু করি এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয়ভাবে এদের বর্জন করি৷ দেশীয় আইন ও সংবিধান বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সাথে যারা জড়িত তাদের ঘৃণা করার সঠিক সময় এখন৷ যেমন করে আমার মহান মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী রাজাকার, আলবদর, আলসামসদের সামাজিক ভাবে বর্জন করেছি৷ ঠিক তেমন করে বর্তমান সময়ের দেশদ্রোহী, দুর্নীতিবাজ, সন্ত্রাস, ধর্ষকসহ দেশীয় আইন ও সংবিধান-বিরোধীদের রুখে দিতে পারি৷
সমাজ ও রাষ্ট্রের চিহ্নিত অপরাধীদের সামাজিক বর্জন তা কেবল তরুণরাই করতে পারে, রুখে দাঁড়ানোর মাধ্যমে৷ এখন থেকে তরুণদের শপথ করতে হবে, দেশীয় আইন ও সংবিধান-বিরোধীদের সাথে কোন সম্পর্ক করবো না৷ শপথ বাস্তবায়ন করতে পারলে বর্তমান ও আগামী প্রজন্ম শুদ্ধ হয়ে যাবে বলে আমি বিশ্বাস করি৷