ব্যাংকিং খাতের খারাপ ব্যবস্থাপনা এ খাতে অনৈতিকতার চর্চা বাড়িয়েছে। গত তিন দশকে ব্যাংক খাতের ব্যর্থতার অন্যতম কারণ এই অনৈতিক চর্চা। ব্যাংকে ব্যর্থতার অনেকগুলো ঘটনা ঘটেছে শুধু এ কারণে।
আজ শনিবার রাজধানীর মিরপুরে বিআইবিএম আয়োজিত ২১ তম নূরুল মতিন স্মারক বক্তৃতার এ কথা বলেন মূল বক্তা গ্রামীন ব্যাংকের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল মজিদ।
বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ব্যাংক ম্যানেজমেন্ট (বিআইবিএম) অডিটোরিয়ামে ‘ইথিকস ইন ব্যাংকিং’ শীর্ষক এ বক্তৃতা অনুষ্ঠিত হয়। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) সাবেক অধ্যাপক। ড. একেএম সাইফুল মজিদ বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও বিআইবিএম গভর্নিং বোর্ডের চেয়ারম্যান আব্দুর রউফ তালুকদারের সভাপতিত্বে এতে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিআইবিএমের মহাপরিচালক ড. মো. আখতারুজ্জামান। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, গবেষকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
মূল প্রবন্ধে অধ্যাপক ড. একেএম সাইফুল মজিদ আরও বলেন, ব্যাংকিং খাতে নৈতিকতা চর্চার কিছু সহজাত শক্তি এবং সুবিধা রয়েছে। নৈতিকতার চর্চা থাকলে ব্যাংকের সকল অংশীজনদের স্বার্থ সংরক্ষিত হয়। বিশেষ করে গ্রাহকদের স্বার্থ রক্ষা পায়। আবার ব্যাংকের মালিকদের স্বার্থও রক্ষা পায়। সুতরাং সব পর্যায়ে নৈতিকতার চর্চা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, পরিচালনা পর্ষদ, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার ভূমিকা পুরো ব্যাংকের পারফরমেন্সের ওপর ভূমিকা রাখে। ব্যাংক ব্যবস্থাপনায় স্বাধীন এবং নিরপেক্ষ ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত নেওয়া জরুরী। এধরেনর চর্চা বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলে তা আদর্শ হিসেবে বিবচনা করা যায়। তিনি বলেন, আর্ন্তজাতিক মানের চর্চার আলোকে দেশের ব্যাংক ব্যবস্থাপনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের দায়িত্ব ও কর্তব্য আলাদা করে দেওয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, এএফএম নুরুল মতিন ১৯২৮ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৫১ সালে তদানিন্তন স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের গবেষণা বিভাগে প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৩ সালে তাঁর চাকুরী ঐ ব্যাংকের অপারেশন বিভাগে স্থানান্তরিত হয়। বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের পর থেকেই বাংলাদেশের ব্যাংকিং পরিকাঠামো নির্মাণে তার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার ১৯৭২ এবং বাংলাদেশ ব্যাংক ন্যাশনালাইজেশন অর্ডার ১৯৭২ প্রনয়ণে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। সত্তর দশক এবং পরবর্তীতে ব্যাংকিং খাতের উন্নতির জন্য নীতি নির্ধারণী বিষয়ে তাঁর অবদান ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয়। তিনি ১৯৭৮ সালে মারা যান। ব্যাংকিং খাতে তাঁর অবদান চিরস্মরণীয় করে রাখতে ১৯৯৮ সাল থেকে এই স্মারক বক্তৃতা চালু করে বিআইবিএম।