কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে একাদশে ভর্তি বাণিজ্যের অভিযোগ

আনোয়ার হোসেন

সরকারি নীতিমালাকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলাধীন ১০নং চন্দ্রগঞ্জ ইউনিয়নে অবস্থিত কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি বাণিজ্য করার অভিযোগ উঠেছে কলেজ কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।

একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি। ফি নির্ধারণ করে দিয়ে বেসরকারি কলেজের ভর্তি ফিসহ মাসিক বেতন ও যাবতীয় খরচের বিষয়ে অবহিত করে সংশ্লিষ্ট কলেজে ভর্তির নির্দেশনা দিয়েছে।

এবারও মফস্বল, পৌর ও মেট্রোপলিটন এলাকার বেসরকারি কলেজগুলোর ভর্তিতে সর্বোচ্চ ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি। এমপিওভুক্ত মফস্বল বা পৌর (উপজেলা) এলাকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো একাদশ শ্রেণিতে শিক্ষার্থী ভর্তিতে সেশন ফিসহ ভর্তি ফি সর্বসাকুল্যে এক হাজার টাকা৷ শিক্ষার্থীদের অনুমোদিত ফি’র বেশি না দেওয়ার নির্দেশনা দিয়ে সব ফি রশিদের মাধ্যমে নিতেও নির্দেশনা দিয়েছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় সাব-কমিটি।

অধ্যক্ষ সরকার মো. জোবায়েদ আলী

‘বর্তমান কভিড-১৯ এবং অভিভাবকদের আর্থিক অসচ্ছলতার বিষয় বিবেচনা করে দরিদ্র, মেধাবী ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ভর্তিতে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠাগুলোকে উল্লিখিত ফিগুলো যতদূর সম্ভব মওকুফ করতে হবে।’

সোমবার (১৪ সেপ্টেম্বর) সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, চন্দ্রগঞ্জে অবস্থিত কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রশিদের মাধ্যমে ভর্তি ফি – ১ হাজার টাকা, সেশন ফি – ২ হাজার টাকা, উন্নয়ন ফি – ৫০০ টাকা৷ এ ছাড়া ভর্তি ফরম বাবদ নেওয়া হচ্ছে আরো ২০০ টাকা৷ সর্বমোট ৩ হাজার ৭০০ টাকা৷

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘কলেজে ভর্তির জন্য অতিরিক্ত টাকা নেওয়ায় আমাদের মতো দরিদ্র শিক্ষার্থীরা অনেকেই হতাশাগ্রস্ত। কোনো সুপারিশও শোনেন না স্যাররা।’

কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের রশিদ

অভিভাবক আব্দুল কাদের বলেন, ‘সরকার শিক্ষাকে সহজলভ্য করার জন্য ভর্তি ফি নির্ধারণ করে দিয়েছে। কিন্তু কলেজগুলো তিন থেকে চার গুণ অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। আমার মেয়েকে ভর্তি করিয়েছি অতিরিক্ত ফি দিয়ে।’

অভিভাবক মো. হালিম বলেন, ‘কৃষক মানুষ টাকা-পয়সা সব সময় হাতে থাকে না। অনেক কষ্ট করে তিন হাজার টাকা সংগ্রহ করে ছেলেকে ভর্তি জন্য পাঠিয়েছিলাম কলেজে। কিন্তু স্যাররা ৩ হাজার ৭০০ টাকার কম ভর্তি করেনি।’

নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রনেতা জানান, প্রতি বছর অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়ে থাকে কিন্তু ছাত্রনেতারা সুযোগ-সুবিধা পায় বলে বিষয়টি কেউ জানতে পারেনা৷

কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের অধ্যক্ষ সরকার মো. জোবায়েদ আলী বলেন, নীতিমালা মেনে সকল কার্যক্রম চলছে৷ তিনি দাবি করেন, কফিল উদ্দিন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ জেলা সদরে অবস্থান করছে, উপজেলা এবং থানা এলাকায় নয়; তাই এমন ফি নেওয়া হচ্ছে৷

মো. জোবায়েদ আলী আরও বলেন, বৈশ্বিক মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে দীর্ঘদিন কলেজ বন্ধ ছিল৷ তাই প্রতিষ্ঠানের উন্নয়নের কথা চিন্তা করে অতিরিক্ত ফি নেওয়া হচ্ছে৷