এ বছর ডেঙ্গুতে মৃত্যুর ঘটনা অন্য যে কোনো বছরের তুলনায় বেশি। প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা জোরদার না করলে ডেঙ্গু হয়ে উঠতে পারে আরও ভয়াবহ।
অনেক ক্ষেত্রেই ডেঙ্গু জ্বরের কোনো উপসর্গ থাকে না। কারও কারও ক্ষেত্রে সাধারণ ফ্লুতে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণগুলো প্রকাশিত হয়। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গু জ্বরের শুরু থেকে জ্বর, মাথাব্যথা, গা-হাত-পা ব্যথা, অস্থি সন্ধিতে ব্যথা, চোখের পেছন দিকে ব্যথা, পিঠে ব্যথা, বমি, পেটে ব্যথা, অরুচি, পাতলা পায়খানা হতে পারে। চতুর্থ-পঞ্চম দিনে জ্বর চলে যায়। ক্ষেত্রবিশেষে আবার ফেরত আসে জ্বর।
প্লাটিলেট বা অণুচক্রিকা হ্রাস: জ্বর কমতে থাকলে প্লাটিলেট কমতে শুরু করে। অনেকের এই কণিকা বিপৎসীমার অনেক নিচে নেমে যায়। শুরু হতে পারে রক্তক্ষরণ, বিপর্যয়।
এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম: ডেঙ্গুতে অনেক সময় মারাত্মক কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে। এসব জটিলতায় সাধারণত লিভার, কিডনি, মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ইত্যাদি অঙ্গ আক্রান্ত হতে পারে। এসব অঙ্গ যখন আক্রান্ত হয় তখন অস্বাভাবিক কিছু লক্ষণ প্রকাশিত হয়। এ জটিলতাগুলোকে বলা যায় এক্সপান্ডেড ডেঙ্গু সিনড্রোম।
মস্তিষ্কে আক্রমণ: মস্তিষ্ক আক্রান্ত হলে হতে পারে এনকেফালাইটিস। এর ফলে তীব্র মাথাব্যথা, বমি, খিঁচুনি, কথাবার্তায় অসংলগ্নতা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে। রোগী কখনও মূর্ছা যেতে পারে। কখনও মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হতে পারে কিংবা রক্তনালি আটকে যেতে পারে।
লিভার, পিত্তথলি আক্রমণ: ডেঙ্গু থেকে হতে পারে হেপাটাইটিস বা যকৃতের প্রদাহ। এ থেকে হঠাৎ করে যকৃৎ বিকল হয়ে যেতে পারে। ডেঙ্গু জ্বরে পিত্তথলিতে পাথর না থাকলেও প্রদাহ সৃষ্টি হয়। এটি অগ্ন্যাশয়ের প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে। ক্ষেত্রবিশেষে ডেঙ্গু থেকে হতে পারে ডায়রিয়া। প্লীহা ফেটে যেতে পারে।
হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস ও কিডনি বিকল: ডেঙ্গুর কারণে হৃৎপিণ্ডের পেশি কোষ আক্রান্ত হতে পারে। এটাকে বলা হয় মায়োকার্ডাইটিস। ডেঙ্গু থেকে হৃদস্পন্দন এলোমেলো হতে পারে। হৃৎপিণ্ডের বাইরের প্রাচীরে প্রদাহ হতে পারে, পানি জমে যেতে পারে। ডেঙ্গু ভাইরাস ক্ষেত্রবিশেষে ফুসফুস বিকল করে দিতে পারে। ডেঙ্গু থেকে কিডনি বিকল হতে পারে।
করণীয়: এই মৌসুমে জ্বর হলে ডেঙ্গু কিনা জেনে নিন। ডেঙ্গু হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এ জ্বরের বিপদ চিহ্ন দেখা দিলে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে আসুন।